মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, তার প্রভাব পড়েছে এশিয়ার শেয়ার বাজারেও।
শুক্রবার জাপানের নিক্কেই সূচক প্রায় ৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়, আর হংকংয়ের শেয়ার বাজার ২০০৮ সালের পর থেকে সবচেয়ে বড় সাপ্তাহিক দরপতনের দিকে যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সতর্ক করে বলেছেন, মার্কিন শুল্কের উপর দেওয়া ৯০ দিনের বিরতি ‘ভঙ্গুর’।
বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এর ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, যা অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ।
ট্রাম্প যদিও চীনের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি করার আশা প্রকাশ করেছেন, তবে চীনের পক্ষ থেকে একে ‘ব্ল্যাকমেল’ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে এবং এর তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা আলোচনা করতে প্রস্তুত, তবে তা পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে হতে হবে।
এই অস্থিরতার মধ্যে, মার্কিন বাণিজ্য সচিব স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, ৭৫টির বেশি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে চায়।
অন্যদিকে, ভিয়েতনাম জানিয়েছে, তারা তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্য পাঠানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছেন এবং আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটন যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
মার্কিন শুল্কের এই বিরতি সত্ত্বেও, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি।
কারণ, অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, শুল্ক নীতির এই অনিশ্চয়তার কারণে শেয়ার বাজার আরও পড়তে পারে।
গোল্ডম্যান স্যাকস-এর মতে, বর্তমানে মন্দা আসার সম্ভাবনা প্রায় ৪৫ শতাংশ।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর কিছু প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য, রেমিটেন্স প্রবাহ এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
তাই, এই বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের বিষয়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান