শিরোনাম: গোলান মালভূমিতে সামরিক তত্ত্বাবধানে পর্যটন: ইসরায়েলের বিতর্কিত পদক্ষেপ
মধ্যপ্রাচ্যের গোলান মালভূমি, যা একসময় সিরিয়ার অংশ ছিল, বর্তমানে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে। এই অঞ্চলে সম্প্রতি ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী পর্যটকদের জন্য বিশেষ ভ্রমণ আয়োজন করেছে, যা ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
আসন্ন পাসওভার উৎসবকে কেন্দ্র করে এই ভ্রমণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
খবর অনুযায়ী, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বিতর্কিত এই অঞ্চলে বেসামরিক নাগরিকদের জন্য হাইকিং ট্যুরের ব্যবস্থা করেছে। এই ট্যুরগুলো প্রতিদিন দুবার করে অনুষ্ঠিত হবে এবং আগামী রবিবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য চলবে।
টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা শেষ হয়ে যায়। বুলেটপ্রুফ বাসের মাধ্যমে ছোট ছোট দল সামরিক প্রহরায় করে সিরিয়ার অভ্যন্তরে প্রায় ২.৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণ করবে।
উল্লেখ্য, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর ইসরায়েল এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
এই ভ্রমণসূচিতে রয়েছে দামেস্কের দৃশ্যমান হারমোন পর্বত, লেবাননের শেবা ফার্মস এবং রুকাদের উপত্যকা, যা জর্ডানের সীমান্তের কাছে অবস্থিত। এছাড়াও, পর্যটকরা পুরনো অটোমান হিজাজ রেলওয়ের ধ্বংসাবশেষও দেখতে পারবেন, যা একসময় ইস্তাম্বুল থেকে হাইফা, নাবলুস এবং বর্তমান সৌদি আরবের পবিত্র স্থানগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করত।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর ২১০তম ডিভিশন, গোলান আঞ্চলিক কাউন্সিল, কেশেত ইহোনাথান ধর্মীয় শিক্ষা কেন্দ্র, গোলান ফিল্ড স্কুল এবং ইসরায়েল প্রকৃতি ও পার্ক কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে এই ভ্রমণের আয়োজন করা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, গত বছর ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের পর “নিরাপদ উত্তরে ফেরা” শীর্ষক বৃহত্তর কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই ট্যুরগুলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়ে সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এই ভ্রমণ তাদের নিজস্ব ঝুঁকিতে হবে এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হলে যে কোনও সময় তা বাতিল করা হতে পারে।
যদিও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করছে যে এই ট্যুরগুলো ‘ইসরায়েলের অভ্যন্তরে’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তবে আন্তর্জাতিকভাবে এই স্থানটি সিরিয়ার অংশ হিসেবেই স্বীকৃত।
উল্লেখ্য, বাশার আল-আসাদের দেশ ত্যাগের পরপরই ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা চালায় এবং ১৯৭৪ সালের একটি চুক্তি লঙ্ঘন করে স্থল সৈন্য পাঠায়।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সিরিয়ার নতুন সরকার এবং তাদের মিত্রদের সীমান্ত এলাকা থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং একটি উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা পর্যন্ত ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে সেখানে মোতায়েন রাখার কথা বলেছেন।
কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা, নিরাপত্তা পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে পাসওভারের পর আরও ভ্রমণের আয়োজন করা সম্ভব হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান