**ইউক্রেনে রুশ সেনাদের হাতে চার যুদ্ধবন্দীর নিহত হওয়ার অভিযোগ, তদন্ত শুরু**
ইউক্রেন সরকার দেশটির পূর্বাঞ্চলে রুশ বাহিনীর হাতে নিহত হওয়া চারজন যুদ্ধবন্দীর সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করেছে। ইউক্রেনের মানবাধিকার বিষয়ক সংসদীয় কমিশনার দিমিত্রো লুবিনেটস বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ১৩ই মার্চ তারিখে, দক্ষিণ ইউক্রেনের পিয়াতিখাতকি গ্রামে, আত্মসমর্পণ করা অবস্থায় ওই চার ইউক্রেনীয় সেনাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
দিমিত্রো লুবিনেটস সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে জানান, নিহত সৈন্যদের কারও কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না। তারা একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন থেকে “হাত উঁচু করে” বেরিয়ে আসছিলেন।
লুবিনেটস একে জেনেভা কনভেনশনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর তথ্য অনুযায়ী, নিহত সৈন্যদের ঘটনাটি ১৩ই মার্চ তারিখে জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের পিয়াতিখাতকি গ্রামে ঘটেছিল। এই ঘটনার একটি ড্রোন ফুটেজও যাচাই করেছে এপি।
ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর ১২৮তম মাউন্টেন অ্যাসল্ট ব্রিগেডের ধারণ করা এই ভিডিওতে দেখা যায়, রুশ ইউনিফর্ম পরিহিত সৈন্যরা চারজন ইউক্রেনীয় সেনার দিকে অস্ত্র তাক করে তাদের পেছন থেকে গুলি করছে।
অন্যদিকে, রুশ বাহিনীর ধারণ করা একটি ভিডিও এপি’র নজরে আসে, যা প্রো-ক্রেমলিন সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হয়েছিল। ভিডিওটিতে দেখা যায়, সেনারা জীবিত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে, কিন্তু হঠাৎ করেই দৃশ্যটি শেষ হয়ে যায়।
ঘটনার সময়, রুশ সেনারা শান্তি আলোচনার প্রাক্কালে জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের পিয়াতিখাতকিতে তাদের পতাকা স্থাপন করার চেষ্টা করছিল।
ইউক্রেনের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার দিমিত্রো লুবিনেটস জানিয়েছেন, তিনি এই ঘটনার তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) এবং জাতিসংঘের কাছে অভিযোগ জানাবেন।
তিনি টেলিগ্রামে লিখেছেন, “সংস্থাগুলোকে অবশ্যই এই অপরাধ লিপিবদ্ধ করতে হবে। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই, এই ধরনের হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং রুশ ফেডারেশনের একটি সুসংহত নীতি, যা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই ধরনের ঘটনাগুলো কেবল নথিভুক্ত করাই যথেষ্ট নয়, বরং এর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা উচিত।” এছাড়াও, রুশ বাহিনীর দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হওয়া ইউক্রেনীয় নাগরিকদের প্রতি তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা