বিশ্বজুড়ে বিলাসবহুল হোটেলগুলোতে প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার প্রবণতা বাড়ছে, যা ভ্রমণকারীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বর্তমান সময়ে মানুষ শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে চায়। এই কারণে, অভিজাত হোটেলগুলো তাদের অতিথিদের জন্য বিভিন্ন ধরণের আউটডোর কার্যক্রমের ব্যবস্থা করছে।
সম্প্রতি, ভ্রমণ বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিবেদনে এই নতুন ধারার বিষয়টি উঠে এসেছে। এই পরিবর্তনের মূল কারণ হলো প্রকৃতিতে মিশে যাওয়ার আগ্রহ।
ভ্রমণের মাধ্যমে প্রকৃতির কাছাকাছি যাওয়া এখনকার মানুষের কাছে এক নতুন অভিজ্ঞতা। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিলাসবহুল হোটেলগুলো এখন হাইকিং, ট্রেকিং, যোগা ও স্পা-এর মতো আকর্ষণীয় অফার নিয়ে আসছে।
চিলির টরেস দেল পাইন ন্যাশনাল পার্কের মতো দুর্গম স্থানে অবস্থিত এক্সপ্লোরা হোটেলগুলোতে হাইকিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও, আর্জেন্টিনার হোটেলগুলোতেও একই ধরনের সুযোগ রয়েছে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য, এই হোটেলগুলো তাদের কার্যক্রম দক্ষিণ আমেরিকার বাইরে আইসল্যান্ডেও প্রসারিত করেছে।
ব্ল্যাক টমেটো নামক একটি ভ্রমণ সংস্থা গ্রিনল্যান্ডে একটি বিশেষ ভ্রমণের ব্যবস্থা করেছে, যেখানে উমানাক পর্বতে আরোহণের সুযোগ রয়েছে। আফ্রিকার নামিবিয়া ও তানজানিয়ার মতো স্থানেও এখন মাল্টি-ডে হাইকিংয়ের চাহিদা বাড়ছে।
শুধু তাই নয়, হাওয়াইয়ের সেনসি লানাই, টেনেসির ব্ল্যাকবেরি মাউন্টেন এবং নিউইয়র্কের র্যাঞ্চ-এর মতো হোটেলগুলো তাদের অতিথিদের জন্য বিশেষ প্রোগ্রাম চালু করেছে। এই প্রোগ্রামগুলোতে হাইকিং, ফিটনেস ট্রেনিং এবং স্পা-এর মতো সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
ইউরোপেও এই প্রবণতা বাড়ছে। রোকো ফোর্ট হোটেলস-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রতিটি হোটেলে স্থানীয় রুটে হাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। ইতালির পালাজো ফিউজ্জি-তে “হাইকিং ফর লনজিভিটি” নামের একটি প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে, যেখানে গ্রুপে ভ্রমণের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়।
ভুটানে অবস্থিত গ্যাংটে লজ, গাইডস অফ ভুটানের সহযোগিতায় নতুন হাইকিং ট্রেইল তৈরি করেছে, যা পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। শ্রীলঙ্কার রেসপ্লেন্ডেন্ট সিলন, ১৪টি পদচিহ্ন তৈরি করেছে যা বন ও চা বাগান দিয়ে গিয়েছে।
এই উদ্যোগগুলো পর্যটকদের প্রকৃতির সাথে আরও নিবিড়ভাবে মিশে যাওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে। এই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে, ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনালের মতো বড় হোটেল চেইনগুলো তাদের পোর্টফোলিওতে প্রকৃতি-কেন্দ্রিক ব্র্যান্ড যুক্ত করেছে।
তারা আউটডোর ভ্রমণের প্রতি মানুষের আগ্রহকে গুরুত্ব দিচ্ছে। তাদের নতুন ব্র্যান্ড, পোস্টকার্ড ক্যাবিনস এবং ট্রেইলবোর্ন, প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার সুযোগ তৈরি করছে। ম্যারিয়ট-এর এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে যে, ভ্রমণকারীরা এখন প্রকৃতির সাথে সময় কাটাতে বেশি আগ্রহী।
ভবিষ্যতে, ভ্রমণের ধারণা আরও পরিবর্তন হবে। মানুষ স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে চাইবে, যা হোটেলগুলোর নতুন নতুন উদ্ভাবনে সাহায্য করবে।
তথ্যসূত্র: ট্রাভেল অ্যান্ড লেজার