হুপিং কাশি বাড়ছে আমেরিকায়, টিকাকরণের হারে পতন: বাংলাদেশের জন্য সতর্কবার্তা?
বিশ্বজুড়ে যখন হামের প্রাদুর্ভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, তখন আমেরিকাতেও হুপিং কাশিতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ভ্যাকসিনেশনের (টিকাকরণ) হার কমে যাওয়া এবং জনস্বাস্থ্য খাতে অর্থ বরাদ্দের ঘাটতির কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি শুধু আমেরিকার জন্য নয়, বরং বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা।
সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক মাসে লুইজিয়ানাতে হুপিং কাশিতে আক্রান্ত হয়ে দুটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওয়াশিংটন রাজ্যেও এক দশকের বেশি সময়ের পর প্রথম মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
এছাড়াও, ইডাহো এবং সাউথ ডাকোটায় চলতি বছর এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হুপিং কাশি প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল টিকাকরণ।
কোভিড-১৯ মহামারীর পর থেকে আমেরিকাতে হাম, মাম্পস এবং রুবেলাসহ বিভিন্ন ভ্যাকসিনের (টিকা) হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ফেডারেল ডেটা অনুসারে, হুপিং কাশি, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, হেপাটাইটিস বি এবং পোলিওর মতো রোগের টিকাকরণও কমেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে শিশুদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যাওয়া উদ্বেগের কারণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনস্বাস্থ্য খাতে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। টিকাকরণের হার বাড়ানো এবং মানুষকে ভ্যাকসিনের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা জরুরি।
আমেরিকার স্বাস্থ্য বিভাগের প্রাক্তন কর্মকর্তারা বলছেন, স্বাস্থ্যখাতে বাজেট কমানো এবং কর্মীদের ছাঁটাইয়ের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। এই অবস্থায়, রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় স্থানীয় স্বাস্থ্য সংস্থাগুলির ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আমেরিকার পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে, বাংলাদেশের জন্য কিছু জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। টিকাকরণ কর্মসূচি জোরদার করা এবং মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
আমাদের দেশে শিশুদের নিয়মিত টিকাকরণ নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, যেমন ইপিআই (সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি)।
হুপিং কাশি এবং অন্যান্য প্রতিরোধযোগ্য রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকাকরণের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিটি শিশুর জন্য সময়মতো টিকা নেওয়া নিশ্চিত করা গেলে, রোগের বিস্তার রোধ করা সম্ভব।
জনস্বাস্থ্যকর্মীদের মতে, টিকাকরণের মাধ্যমে শিশুদের জীবন রক্ষা করা যায় এবং একটি সুস্থ সমাজ গড়ে তোলা যায়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন