হলিউডের জনপ্রিয় ফ্যাশন ডিজাইনার ও লেখিকা হুইটনি পোর্ট-রোজেনম্যান সম্প্রতি তাঁর সন্তান ধারণের পথে আসা নানা প্রতিবন্ধকতা নিয়ে মুখ খুলেছেন। ৪০ বছর বয়সী এই তারকা জানিয়েছেন, মা হওয়ার জন্য তাঁর পথটা মোটেও সহজ ছিল না।
একটি পডকাস্টে তিনি তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন, যা শুনে অনেকেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন।
হুইটনি জানান, তাঁর প্রথম গর্ভধারণ স্বাভাবিক ছিল এবং কোনো জটিলতা ছাড়াই তিনি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। তাঁর ছেলে সানি সাত বছর বয়সী।
কিন্তু এরপরই যেন তাঁর জীবনে নেমে আসে এক কঠিন পরীক্ষা। দ্বিতীয়বার মা হতে গিয়ে তিনি একের পর এক ব্যর্থ হতে থাকেন।
প্রথমে, একবার গর্ভধারণের আট সপ্তাহের মাথায় তাঁর গর্ভপাত হয়। এরপর, আরও কয়েকবার একই ঘটনার শিকার হন তিনি।
চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞের দ্বারস্থ হন। চিকিৎসকরা জানান, তাঁর শরীরে সন্তান ধারণে কিছু সমস্যা রয়েছে। এরপরেই শুরু হয় তাঁর চিকিৎসা।
চিকিৎসার অংশ হিসেবে তিনি ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ) পদ্ধতির আশ্রয় নেন। এই পদ্ধতিতে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলন ঘটিয়ে ভ্রূণ তৈরি করা হয় এবং পরে তা মায়ের জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করা হয়।
এই প্রক্রিয়ায় তিনি বেশ কয়েকটি ভ্রূণ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, প্রতিস্থাপনের আগে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত সেই প্রক্রিয়াটি সফল হয়নি। মানসিক দিক থেকেও তিনি ভেঙে পড়েন।
এরপর তিনি সারোগেসি বা গর্ভ ভাড়া করার কথা ভাবেন। এই পদ্ধতিতে অন্য নারীর গর্ভে ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা হয়। হুইটনি ও তাঁর স্বামী এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মা হওয়ার চেষ্টা করেন।
কিন্তু এক্ষেত্রেও তাঁদের কপাল পোড়ে। দুজন নারীর গর্ভে ভ্রূণ প্রতিস্থাপনের পরেও গর্ভপাত হয়।
হুইটনি বলেন, “আমরা দুজনেই খুব ভেঙে পড়েছিলাম। এরপর আমরা এক বছরের বিরতি নিয়েছিলাম।”
অবশেষে, হুইটনি আবার আইভিএফ পদ্ধতির আশ্রয় নেন এবং সফলভাবে একটি সুস্থ ভ্রূণ তৈরি করতে সক্ষম হন। বর্তমানে তিনি নতুন একজন সারোগেটের (গর্ভ ভাড়া দেওয়া নারী) সন্ধান করছেন, যিনি তাঁর এই ভ্রূণটি ধারণ করতে পারবেন।
হুইটনির এই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা শুনে অনেকেই তাঁদের দুঃখের কথা জানিয়েছেন। অনেক নারী তাঁদের সন্তান ধারণের পথে আসা বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন।
হুইটনির এই সাহসী পদক্ষেপ অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। তাঁর এই জার্নি আরও অনেক দম্পতির কাছে সাহস যোগাবে যারা মা-বাবা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
তথ্য সূত্র: পিপল