পেনসিলভানিয়ার গভর্নরের বাসভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় সময় রবিবার ভোরে, রাজ্যের গভর্নর জশ শাপিরোর সরকারি বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
সৌভাগ্যবশত, গভর্নর এবং তার পরিবারকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছিল, তবে বাসভবনটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ৩৮ বছর বয়সী কোডি বালমারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যার চেষ্টা, গুরুতর অগ্নিসংযোগ, এবং সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বালমার জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, গভর্নরের প্রতি তার ঘৃণা ছিল এবং তিনি গভর্নরকে হাতুড়ি দিয়ে মারধর করতে চেয়েছিলেন।
ঘটনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিভাবে হামলাকারী এত সহজে গভর্নরের বাসভবনে প্রবেশ করে আগুন লাগিয়ে দিতে পারল, তা গভীর উদ্বেগের বিষয়।
তাদের মতে, নিরাপত্তা বলয় ভেদ করে হামলাকারীর প্রবেশ প্রমাণ করে, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড় ধরনের দুর্বলতা ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা জোনাথন ওয়্যাকরো সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “গভর্নরের বাসভবনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা উচিত। হামলাকারী সহজেই একাধিক নিরাপত্তা স্তর ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয়েছিল।”
ঘটনার তদন্তকারীরা এখন ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছেন। তারা নিরাপত্তা কর্মীদের দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতি ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছেন।
এছাড়াও, বাসভবনের নজরদারি প্রযুক্তি সঠিকভাবে কাজ করছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গভর্নরের বাসভবনে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন থাকার কথা। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঘটনার সময় কিভাবে নিরাপত্তা কর্মীরা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল, তাও তদন্তের অংশ।
আর্ন্তজাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, হামলাকারী বালমার কিভাবে ভবনে প্রবেশ করেছিল। জানা যায়, হামলাকারী প্রথমে বাসভবনের বাইরের বেড়া টপকায়।
এরপর একটি হাতুড়ি দিয়ে জানালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে।
এরপর সে আরেকটি দরজা ভেঙে পালিয়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রাক্তন প্রধান চার্লস রামসে এই ঘটনার সমালোচনা করে বলেছেন, “নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের দুর্বলতা ছিল।” তিনি মনে করেন, এই ধরনের ঘটনা থেকে শুধু পেনসিলভানিয়ার গভর্নরই নন, বরং অন্যান্য রাজ্যের গভর্নর এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও শিক্ষা নেওয়া উচিত।
এই ঘটনার পর, গভর্নর শাপিরো বলেছেন, তিনি তার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নন এবং এই ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।