রাশিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা প্রধান সের্গেই নারিশকিন পোল্যান্ড এবং বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোকে হুমকি দিয়েছেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তার মতে, উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা (NATO)-এর কোনো ‘আগ্রাসন’-এর ঘটনা ঘটলে পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া এবং এস্তোনিয়া সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নারিশকিন রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা রিয়া নভোস্তি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, রাশিয়া যদি দেখে যে ন্যাটোর পক্ষ থেকে তাদের বা প্রতিবেশী দেশ বেলারুশের প্রতি কোনো হুমকি আসছে, তাহলে পুরো সামরিক জোটের ওপর প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
তবে এক্ষেত্রে পোল্যান্ড এবং বাল্টিক দেশগুলো সবার আগে ক্ষতির শিকার হবে। তার এই মন্তব্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান সফল হলে মস্কো ইউরোপের প্রাক্তন সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর দিকে নজর দেবে।
রাশিয়ার গোয়েন্দা প্রধান ন্যাটোর কার্যকলাপকে এই সংকটপূর্ণ পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন।
তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, রাশিয়ার সীমান্ত এবং বেলারুশের কাছাকাছি এলাকায় ন্যাটোর সামরিক তৎপরতা বেড়েছে। নারিশকিনের মতে, পোল্যান্ড এবং বাল্টিক দেশগুলো ‘বিশেষভাবে আগ্রাসী’, অন্তত তাদের কথায় তো তেমনই মনে হয়। তারা নাকি ক্রমাগত অস্ত্রের ঝনঝনানি দেখাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পোল্যান্ড পরমাণু অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় মিত্রদের জন্য ফ্রান্সের পারমাণবিক সুরক্ষা প্রসারিত করার প্রস্তাব করেছিলেন। পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা এর সমর্থন করে বলেছিলেন, এটি পোলিশ নিরাপত্তার জন্য উপকারী হবে।
নারিশকিন অভিযোগ করেন, বেলারুশ এবং কালিনিনগ্রাদ সীমান্তের কাছে পোল্যান্ড প্রায় ২০ লক্ষ অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মাইন স্থাপন করার পরিকল্পনা করছে।
গত মাসে পোল্যান্ড এবং বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো রাশিয়ার আগ্রাসনের ভয়ে আন্তর্জাতিক ল্যান্ডমাইন নিষিদ্ধকরণ চুক্তি (অটোয়া কনভেনশন) থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়।
নারিশকিন শান্তি আলোচনার বিষয়ে রাশিয়ার কৌশলগত লক্ষ্য পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ক্রেমলিন চায় না ইউক্রেন পরমাণু অস্ত্র তৈরি করুক।
তারা দেশটির ‘সামরিকীকরণ’ এবং ‘নাৎসিমুক্তকরণ’-এর পক্ষে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি স্থাপনের চেষ্টা করছে, সেক্ষেত্রে মস্কোকে আঞ্চলিক এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু ছাড় দিতে হতে পারে।
এমনটা হলে রাশিয়ার সম্প্রসারণবাদী মনোভাব আরও বাড়বে এবং তারা পুনরায় অস্ত্র সজ্জিত হয়ে ইউরোপের দিকে আরও আগ্রাসী হতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা