চীনের বাজারে বোয়িং-এর বিমান সরবরাহ বন্ধের খবরে শেয়ারের দর পতন।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বোয়িং কোম্পানির বিমান সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে চীন। এর ফলে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) শেয়ার বাজারে বোয়িং-এর শেয়ারের দামে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে।
ব্লুমবার্গ-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনা কর্তৃপক্ষ তাদের এয়ারলাইনসগুলোকে বোয়িং থেকে কোনো বিমান গ্রহণ করতে নিষেধ করেছে।
চীনের এই পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ বিমান নির্মাতা কোম্পানির জন্য একটি বড় ধাক্কা। কারণ চীন বিশ্বের বৃহত্তম বিমান বাজার এবং বোয়িং-এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
২০১৯ সাল থেকে বোয়িং কার্যত চীনা বাজার থেকে অনেকটা দূরে ছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধের সূচনা হওয়ার পর থেকেই এমনটা চলছিল। যদিও এর পেছনে বোয়িং-এর নিজস্ব কিছু সমস্যাও ছিল, যেমন ২০১৮ ও ২০১৯ সালের শেষের দিকে তাদের বহুল-বিক্রীত ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের দুটি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
বোয়িং-এর জন্য বিমান সরবরাহ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিমান হস্তান্তরের পরেই তারা পেমেন্ট পেয়ে থাকে। বোয়িং বর্তমানে প্রায় ৫৫টি বিমান তৈরি করে রেখেছে, যেগুলো তারা গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করতে পারছে না।
এই গ্রাহকদের মধ্যে প্রধানত চীন এবং ভারতের এয়ারলাইনসগুলো রয়েছে।
বোয়িং-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বছরগুলোতে চীনে তাদের বিমানের বিক্রি কমে গেছে। ট্রাম্প প্রশাসন চীনের পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের সব পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসায়।
এর ফলে চীনের গ্রাহকদের কাছে বোয়িং-এর বিমান কেনা কঠিন হয়ে পড়েছিল, এমনকি সরবরাহ বন্ধ না হলেও।
বোয়িং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোম্পানিটি হিসাব করে দেখেছে যে তারা বছরে প্রায় ৭৯ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা) যোগ করে এবং সরাসরি ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১৬ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করে।
তাদের নিজস্ব কর্মী সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার।
তবে, চীনের বাজারে বোয়িং-এর ব্যবসা কমে যাওয়ার পেছনে শুধু বাণিজ্য যুদ্ধই একমাত্র কারণ নয়। ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানের দুর্ঘটনার কারণেও অনেক সমস্যা হয়েছে।
২০১৯ সালের দুটি দুর্ঘটনার পর চীনে এই মডেলের বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে, অনেক দিন পর্যন্ত বিমান সরবরাহ প্রায় বন্ধ ছিল।
যদিও বিভিন্ন দেশ ২০২০ সালের শেষের দিকে এই বিমান পুনরায় ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল, সরবরাহ ধীরে ধীরে আবার শুরু হয়েছিল।
তথ্য সূত্র: সিএনএন