শিরোনাম: দ্রুত হাঁটা: হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে, বলছে গবেষণা
হৃদরোগের সমস্যা কমাতে নিয়মিত দ্রুত হাঁটার জুড়ি নেই। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে।
যুক্তরাজ্যের একটি গবেষণা দল এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। গবেষণাটি বলছে, যারা দ্রুত গতিতে হাঁটেন, তাদের হৃদস্পন্দন সংক্রান্ত জটিলতা, যেমন – অনিয়মিত হৃদস্পন্দন বা অ্যারিদমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের হাঁটার গতি কম, তাদের তুলনায় যারা দ্রুত হাঁটেন, তাদের হৃদরোগের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা ঘণ্টায় প্রায় ৬.৪ কিলোমিটারের বেশি গতিতে হাঁটেন, তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপকারী।
গবেষণায় ৪ লাখের বেশি মানুষের হাঁটার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়। তাদের মধ্যে অনেকের জীবনযাত্রা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছিল।
এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৯ শতাংশের হৃদস্পন্দন সংক্রান্ত সমস্যা দেখা গিয়েছিল।
পরবর্তীতে, দ্রুত গতিতে হাঁটা ব্যক্তিদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে অনেক কম ছিল।
গবেষকরা জানিয়েছেন, নিয়মিত শরীরচর্চা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। দ্রুত হাঁটা, শরীরের জন্য উপকারী একটি ব্যায়াম।
এটি হৃদরোগের পাশাপাশি আরও অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার অংশ হিসেবে হাঁটাকে বেছে নেওয়া যেতে পারে।
গবেষণায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে।
সেটি হলো, যারা গড় গতিতে অথবা দ্রুত হাঁটেন, তাদের ক্ষেত্রে হৃদরোগের ঝুঁকি কম থাকে।
যাদের হাঁটার গতি কম, তাদের তুলনায় এই হার যথাক্রমে ৩৫% এবং ৪৩% পর্যন্ত কম হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দ্রুত হাঁটার কারণে শরীরে মেটাবলিজম এবং প্রদাহের মাত্রা কমে যায়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকিও হ্রাস পায়।
অতিরিক্ত ওজন, উচ্চ রক্তচাপ, এবং ডায়াবেটিসের মতো সমস্যাগুলো হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
দ্রুত হাঁটা এই সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
তবে, এই গবেষণাটি কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
এটি পর্যবেক্ষণমূলক একটি গবেষণা ছিল, যার অর্থ হলো, হাঁটার গতির কারণে সরাসরি হৃদরোগের ঝুঁকি কমে – এমনটা নিশ্চিত করে বলা কঠিন।
এছাড়া, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা মূলত শ্বেতাঙ্গ ছিলেন এবং তাদের গড় বয়স ছিল ৫৫ বছর।
তাই, এই ফলাফলের সার্বিক প্রয়োগযোগ্যতা সম্পর্কে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, যেখানে হৃদরোগ একটি গুরুতর সমস্যা, সেখানে দ্রুত হাঁটার মতো সহজ ব্যায়ামের গুরুত্ব অনেক।
যদিও শহরের যানজট ও পরিবেশ দূষণের কারণে অনেকের জন্য হাঁটা কঠিন হতে পারে, তারপরও সুযোগ থাকলে নিয়মিত হাঁটা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে।
সুতরাং, সুস্থ থাকতে চাইলে প্রতিদিন অন্তত কিছু সময় দ্রুত হাঁটার অভ্যাস করুন।
সম্ভব না হলে, অন্য কোনো শারীরিক কার্যকলাপ করুন যা আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান