যুক্তরাষ্ট্র সরকার চীনকে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন চিপ রপ্তানির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করায় প্রযুক্তি জায়ান্ট এনভিদিয়া (Nvidia)-কে প্রায় ৫.৫ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
কোম্পানিটি জানিয়েছে, তারা এখন চীনে তাদের বিশেষ ‘এইচ২০’ এআই চিপ বিক্রি করতে পারবে না, যদি না তারা বিশেষ লাইসেন্স পায়।
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যেকার প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে এমন পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাষ্ট্রের আশঙ্কা, এনভিদিয়ার তৈরি এই অত্যাধুনিক চিপগুলো চীনের সুপার কম্পিউটারগুলোতে ব্যবহার করা হতে পারে, যা তাদের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
আর তাই, এই ধরনের চিপ রপ্তানির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে।
এনভিদিয়ার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের এপ্রিল মাসের শেষে শেষ হওয়া আর্থিক হিসাবের চতুর্থ প্রান্তিকে এই বিশাল অংকের লোকসান হতে পারে।
এই ঘোষণার পর, বাজারে এনভিদিয়ার শেয়ারের দাম প্রায় ৬ শতাংশ কমে যায়।
শুধু এনভিদিয়াই নয়, এর পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি স্যামসাং ইলেকট্রনিকস এবং এসকে হাইনিক্স-এর শেয়ারও কমেছে।
এমনকি, প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানি অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইস (এএমডি)-এর শেয়ারের দামও হ্রাস পেয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি বাজারের জন্য একটি বড় ধাক্কা।
এর ফলে, এআই প্রযুক্তির অগ্রগতিতে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়তে পারে।
তবে, এনভিদিয়া জানিয়েছে, তারা আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে, যা তাদের আমেরিকান উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
কোম্পানিটি তাদের চিপ ডিজাইন করে, কিন্তু তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির (TSMC) মতো বিভিন্ন ঠিকাদারদের মাধ্যমে সেগুলোর উৎপাদন করে।
উল্লেখ্য, এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র সরকার ২০২২ সালের অক্টোবর মাস থেকে এনভিদিয়া এবং অন্যান্য এআই চিপ প্রস্তুতকারকদের চীনে তাদের উন্নতমানের চিপ বিক্রি করতে বাধা দেয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় চীনও তাদের সেমিকন্ডাক্টর তৈরির প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য সম্প্রতি সেমিকন্ডাক্টর আমদানির ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের কথা বলেছিলেন।
যদিও এই বিষয়ে কিছু নমনীয়তা দেখানোরও সম্ভাবনা রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, তাইওয়ান থেকে আমদানি করা চিপের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি কেমন হয়, সেদিকে এখন সবার নজর।
কারণ, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান থেকে আমদানি করা চিপের ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান