শিরোনাম: খাদ্য সংকটে ইয়েমেন: মার্কিন সাহায্য কাটছাঁটে গম বোঝাই জাহাজটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইয়েমেনে খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (World Food Programme – WFP) জানাচ্ছে, দেশটির প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, জীবন রক্ষাকারী খাদ্যশস্য নিয়ে আসা একটি জাহাজ ইয়েমেনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা (USAID)-র তহবিল কমানোর সিদ্ধান্তের কারণে, এই জাহাজের গম ইয়েমেনে পৌঁছানোর পর বিতরণের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ওরেগন প্রদেশ থেকে একটি বাণিজ্যিক জাহাজ সম্প্রতি গম বোঝাই করে ইয়েমেনের বন্দর শহর এডেনের দিকে রওনা দিয়েছে। জাহাজটি মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে সেখানে পৌঁছানোর কথা।
কিন্তু খাদ্য সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় চুক্তির অভাবে, বন্দরে গম গ্রহণ, সংরক্ষণ এবং তা বিতরণের কোনো ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নেই। ফলে, খাদ্যশস্য হয়তো নষ্ট হয়ে যাবে, অথবা লুটপাটের শিকার হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে USAID-এর কার্যক্রমে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। এর ফলস্বরূপ, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (WFP) সঙ্গে জীবন রক্ষাকারী মানবিক সহায়তা চুক্তিগুলো বাতিল করা হয়েছে।
এর মধ্যে ইয়েমেন এবং আফগানিস্তানের জন্য বরাদ্দকৃত চুক্তিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
যদি এই চুক্তিগুলো পুনর্বহাল না করা হয়, তবে ডব্লিউএফপি-র পক্ষে ইয়েমেনে আসা গম নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে না।
পর্যাপ্ত তহবিলের অভাবে খাদ্য বিতরণের কাজটিও তারা করতে পারবে না। এমন পরিস্থিতিতে, খাদ্য সংকটে জর্জরিত ইয়েমেনের মানুষের জন্য এই গম সরবরাহ অত্যন্ত জরুরি।
তবে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, ইয়েমেনের জন্য সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্তের কারণ হলো, এই সাহায্য হুতি বিদ্রোহীদের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে যেতে পারে।
হুতি বিদ্রোহীরা ২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনের ক্ষমতা দখলের জন্য লড়াই করছে।
জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচি (WFP) সতর্ক করে বলেছে, সহায়তা বন্ধ হলে ইয়েমেনের লাখ লাখ মানুষের জীবন হুমকির মুখে পড়বে। তারা এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য জোর আহ্বান জানাচ্ছে।
ইয়েমেনে দীর্ঘদিন ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে সেখানকার মানুষ চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে। সেখানকার পরিস্থিতি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়।
তথ্য সূত্র: CNN