ফ্রান্সের কারাগারে আবারও হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেখানে কয়েদিদের অধিকারের দাবিতে অগ্নিসংযোগ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার দেশটির বিচারমন্ত্রী জানিয়েছেন, টারাসকন কারাগারে তিনটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, প্যারিসের পূর্বে অবস্থিত ম্যু শহরের একটি ভবনে, যেখানে একজন কারারক্ষী কাজ করেন, সেখানেও আগুন লাগে। এছাড়া, দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত আইক্স-লুইনস-এর একজন কারারক্ষীর গাড়িতেও আগুন ধরানো হয়।
ফরাসি বিচারমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন সি নিউজ টিভি এবং ইউরোপ ১ রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানান, কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, “সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীদের দ্বারা এই হামলা চালানো হয়েছে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মাদক পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা কর্তৃপক্ষ ও কারাগারের কর্মীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে কিনা, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এর আগে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে অন্তত ছয়টি কারাগারে হামলা হয়, যেখানে দেশের শীর্ষস্থানীয় অপরাধীদের রাখা হয়েছে।
ডারমানিন মঙ্গলবার এই হামলাগুলোকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, “আমরা কোনো কিছুই উড়িয়ে দিচ্ছি না। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
ফ্রান্সের সন্ত্রাস দমন বিষয়ক জাতীয় কৌঁসুলি কার্যালয় (PNAT) এই হামলার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে।
তদন্তে সহায়তা করার জন্য ফ্রান্সের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএসআই-এর কর্মকর্তাদেরও নিয়োগ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে কোনো বিদেশি শক্তির যোগসাজশের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ইউরোপে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে কোকেন আসার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় মাদক বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, যা সহিংসতার একটি প্রধান কারণ।
ফ্রান্সে কোকেন আটকের রেকর্ড সৃষ্টি হলেও, অপরাধীরা তাদের কার্যক্রম শহর থেকে ছোট শহরগুলোতেও বিস্তার করছে।
হামলার স্থানগুলোতে “ডিডিপিএফ” (DDPF) লেখা গ্রাফিতি দেখা গেছে, যা সম্ভবত “ফরাসি বন্দীদের অধিকার” -এর সংক্ষিপ্ত রূপ।
পুলিশের কিছু সূত্র বলছে, এর সঙ্গে কোনো বামপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠীর যোগ থাকতে পারে।
তবে বিচারমন্ত্রী ডারমানিন মনে করেন, এই হামলাগুলো সুসংগঠিত অপরাধ চক্রের কাজ হতে পারে।
তিনি বলেন, “আমরা মাদক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি।
কিছু দেশ মাদক ব্যবসার কাছে নতি স্বীকার করেছে… আমরা সেই পর্যায়ে যাইনি, কারণ আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
তথ্য সূত্র: সিএনএন