মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আসন্ন শুল্ক নীতির কারণে জেনেরিক ওষুধের (Generic Drugs) সরবরাহ এবং মূল্যের ওপর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমদানি শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ফলে স্বল্প মূল্যের জীবন রক্ষাকারী ওষুধের সঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপের ফলে শুধু আমেরিকাই নয়, বিশ্বজুড়ে ঔষধের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে প্রায় ২৭০টি ওষুধের ঘাটতি রয়েছে। যদিও এই সংখ্যাটি পূর্বে আরও বেশি ছিল, বিশেষজ্ঞরা বলছেন শুল্ক আরোপের ফলে এই সঙ্কট আরও বাড়তে পারে।
কারণ, দেশটির বাজারে ব্যবহৃত প্রায় ৯০ শতাংশ ওষুধই জেনেরিক, এবং এর প্রধান কাঁচামাল আসে চীন ও ভারত থেকে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত সাধারণ রোগীদের জন্য ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জেনেরিক ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো বর্তমানে তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন। শুল্কের কারণে তাদের উৎপাদন খরচ বাড়বে, যা বাজারে টিকে থাকার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।
এমনকি অনেক কোম্পানি ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হতে পারে, যার ফলস্বরূপ ওষুধের সরবরাহ কমে যাবে। বোস্টন ইউনিভার্সিটির একজন অধ্যাপক রেনা কন্টি উল্লেখ করেছেন, অনেক জেনেরিক ওষুধের উপাদান তৈরি করে মাত্র এক বা দুটি কোম্পানি, তাই সরবরাহ ব্যবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
কোনো একটি কোম্পানি উৎপাদন বন্ধ করে দিলে, ওষুধ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।
ট্রাম্প প্রশাসন যদিও বলছে, এই শুল্কের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের ভেতরের ওষুধ উৎপাদন বাড়ানো এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
তবে, ঔষধ শিল্পের সাথে জড়িত অনেকে মনে করেন, এর ফল উল্টো হতে পারে। তারা বলছেন, শুল্কের কারণে বরং যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের দেশগুলোর ওপর ওষুধের জন্য নির্ভরতা আরও বাড়বে এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদনও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, শুল্ক আরোপের ফলে ঔষধের দাম বাড়তে পারে, যা রোগীদের জন্য উদ্বেগের কারণ হবে।
কারণ, অনেক ক্ষেত্রে রোগীদের প্রেসক্রিপশন পূরণ করতে সমস্যা হতে পারে। এছাড়া, ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো তাদের কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরিয়ে নিতে পারে, যা সরবরাহ ব্যবস্থাকে আরও জটিল করে তুলবে।
এই পরিস্থিতিতে, বিশ্বব্যাপী ঔষধ বাজারের ওপর এর প্রভাব কেমন হবে, সেদিকে সকলের নজর রয়েছে।
বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ওষুধের সহজলভ্যতা এবং দামের ওপর এর প্রভাব কেমন হবে, সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়তে পারে, যেখানে ঔষধের দাম এবং সরবরাহ ব্যবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্বেগের কারণ।
তথ্যসূত্র: সিএনএন