যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি নতুন মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেখানে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, সামান্য কিছু ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, যেমন ট্রাফিক আইন ভঙ্গের মতো ঘটনার কারণেও শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা হচ্ছে।
এই মামলার মূল বিষয় হলো, ভিসা বাতিলের পেছনে কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা এবং এর ফলে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও কর্মজীবনের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
আটলান্টা ভিত্তিক একটি আইনি সংস্থা, ক্যাক বাস্টার এই মামলাটি দায়ের করেছে। মামলায় ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে।
জানা গেছে, এরই মধ্যে কয়েক’শ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বিদেশি। তাদের ভিসা বাতিলের পেছনে সুস্পষ্ট কারণও উল্লেখ করা হয়নি।
মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভারতীয় ও চীনা নাগরিকের সংখ্যাই বেশি, তবে কলম্বিয়া, মেক্সিকো এবং জাপানের নাগরিকরাও রয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেম (SEVIS) থেকে বাদ দেওয়ার মাধ্যমে তাদের আইনি অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। এর ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা, কাজ করা এবং বসবাসের সুযোগ হারাচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, একজন কলম্বিয়ান শিক্ষার্থীর ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে, যিনি একটি পারিবারিক সহিংসতার মামলা থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও ভিসা বাতিলের শিকার হয়েছেন। একইভাবে, ট্রাফিক আইন ভঙ্গের কারণে চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
এমনকি, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার কারণেও শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, যদিও পরে তাদের সাজা কমানো হয়েছিল।
মার্কিন কর্মকর্তারা ভিসা বাতিলের সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করেননি। তবে, কিছু ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হলো, বিক্ষোভসহ কিছু নির্দিষ্ট ধরনের আচরণ সহ্য করা হবে না।
ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি রবার্ট গার্সিয়া জানিয়েছেন, সারা দেশ থেকে প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে।
আইনজীবীরা বলছেন, কর্তৃপক্ষ শুধু অ্যাক্টিভিস্টদেরই টার্গেট করছে না, বরং সামান্য কোনো ঘটনার জের ধরেও ভিসা বাতিল করা হচ্ছে।
মামলার আইনজীবীরা আদালতের কাছে আবেদন করেছেন, যাতে অবিলম্বে বাতিল হওয়া ভিসাগুলো পুনর্বহাল করা হয়। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে।
কারণ অনেক শিক্ষার্থী তাদের পড়াশোনার শেষ পর্যায়ে রয়েছে, কেউ ডক্টরেট থিসিস জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে ভিসা বাতিল হওয়ায় তারা চরম বিপাকে পড়েছে।
এই ঘটনা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়। বিশেষ করে যারা উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যেতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা।
ভিসা প্রক্রিয়াকরণে স্বচ্ছতা এবং ন্যায্যতার অভাব ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
তথ্য সূত্র: CNN