ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার জন্য দ্বিতীয় দফায় বৈঠকে বসতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান। ইতালির রাজধানী রোমে আসন্ন ইস্টার উইকেন্ডে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবেন ওমানের প্রতিনিধিরা।
দীর্ঘদিন ধরে চলা বৈরিতার প্রেক্ষাপটে এই আলোচনাকে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লব এবং মার্কিন দূতাবাস জিম্মি সংকটসহ বিভিন্ন ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়।
এরপর ২০১৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ইরানের সঙ্গে হওয়া পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন। এর ফলস্বরূপ, তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বেড়ে যায় এবং এর জেরে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়ে।
আলোচনায় মূল বিষয়গুলো হলো—ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা থেকে বিরত রাখা, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রশমন এবং বিদ্যমান সংকট নিরসনে ঐকমত্যে পৌঁছানো।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এই বৈঠকে নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
বৈঠকের আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া, আলোচনার অংশ হিসেবে ইরানের পক্ষ থেকে রাশিয়ার সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে কোনো চুক্তি হলে, রাশিয়া তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এদিকে, ইরানের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতিও বেশ উত্তপ্ত। হিজাব আইনকে কেন্দ্র করে এখনো বিক্ষোভ চলছে এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির গুজবও শোনা যাচ্ছে।
এছাড়া, দেশটির মুদ্রা রিয়ালের মান উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক সংকট আরও গভীর হয়েছে।
আলোচনার ইতিবাচক ফল হিসেবে, তেহরান আশা করছে—অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হবে।
এই প্রেক্ষাপটে, ইরানের জন্য দুটি পুরনো এয়ারবাস এ৩৩০-২০০ উড়োজাহাজ কেনা হয়েছে, যা দেশটির বিমান বহরে যুক্ত হতে যাচ্ছে।
এই উড়োজাহাজগুলোতে মার্কিন যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর খবর অনুযায়ী, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এই আলোচনা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস