এড শিরানের নতুন গান ‘আজ়িজাম’ নিয়ে পারস্য সংস্কৃতির উন্মাদনা, প্রবাসী সমাজে এর প্রভাব।
সম্প্রতি, জনপ্রিয় শিল্পী এড শিরান তাঁর নতুন গান ‘আজ়িজাম’ প্রকাশ করেছেন। ফার্সি ভাষায় গাওয়া এই গানের সুর এবং সংগীতায়োজনে রয়েছে পারস্য সংস্কৃতির সুস্পষ্ট ছাপ।
আর গানটি মুক্তির পরেই সাড়া পড়েছে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পারস্য সংস্কৃতির অনুসারীদের মধ্যে। অনেকে একে তাঁদের সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখছেন।
পশ্চিমা বিশ্বে ইরানের সংস্কৃতি এবং ইতিহাস সম্পর্কে অনেক সময় ভুল ধারণা প্রচলিত থাকে। এই গানটি সেই ধারণার বিপরীতে, পারস্য সংস্কৃতির সৌন্দর্যকে তুলে ধরেছে, যা প্রবাসীদের কাছে তাদের শিকড়ের প্রতি নতুন করে আকৃষ্ট করছে।
ইরান থেকে বহু মানুষ বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা, ধর্মীয় নিপীড়ন, এবং আরও নানা কারণে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করেন।
প্রবাসে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের কাছে নিজেদের সংস্কৃতি, ভাষা, এবং ঐতিহ্য সম্পর্কে জানার আগ্রহ সবসময়ই থাকে। এড শিরানের এই গানটি তাঁদের সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে সহায়তা করছে।
‘আজ়িজাম’ গানটি যেন তাদের হারানো সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি, যা তাদের হৃদয়ে নাড়া দিয়ে যায়।
গানটির সুরকার, যিনি নিজেও একজন ইরানি বংশোদ্ভূত, সুইডিশ নাগরিক। গানের কথায় ভালোবাসার গভীরতা এবং পারস্য সংস্কৃতির ঐতিহ্য স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
গানের মিউজিক ভিডিওতেও পারস্য সংস্কৃতির বিভিন্ন অনুষঙ্গ ব্যবহার করা হয়েছে, যা গানটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
আমাদের দেশের অনেক মানুষও জীবিকার তাগিদে বিদেশে বসবাস করেন। তাঁদের জীবনেও দেশের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে।
বিদেশের মাটিতে নিজেদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তা পৌঁছে দিতে তাঁরা নানা ধরনের চেষ্টা করেন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বাংলা গানের কনসার্ট, এবং ঐতিহ্যবাহী খাবারের আয়োজন তাঁদের মধ্যে দেশপ্রেমের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে।
এড শিরানের গানটি যেন তেমনই একটি দৃষ্টান্ত, যা প্রমাণ করে, সংগীতের মাধ্যমে একটি সংস্কৃতি অন্য সংস্কৃতির মানুষের কাছেও পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।
এই গানটি একদিকে যেমন পারস্য সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ, তেমনই বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সংস্কৃতির মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরিতে সহায়তা করে। এটি প্রমাণ করে, সংগীতের মাধ্যমে সংস্কৃতির সীমানা পেরিয়ে যাওয়া যায়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান