কানাডার ওয়াটারলু শহরে, ছয় জন ছাত্রীর জীবন এখন এক অপ্রত্যাশিত অভিজ্ঞতার সাক্ষী। তাদের বাড়ির সামনের লনে বাসা বেঁধেছে একদল বন্য হাঁস, আর সেই হাঁসের দল এতটাই আক্রমণাত্মক যে ছাত্রীদের ঘরবন্দী হয়ে থাকতে হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, হাঁসের ভয়ে তারা সহজে বাইরে বের হতে পারছে না, এমনকি তাদের এক প্রতিবেশীও হাঁসের আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
ওয়াটারলুর উইলফ্রেড লরিয়ার ইউনিভার্সিটির কাছে অবস্থিত ছাত্রাবাসে কয়েক দিন আগে এই ঘটনার সূত্রপাত। প্রথমে ছাত্রীরা বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেয়নি, কিন্তু ধীরে ধীরে হাঁসের দল তাদের এলাকার উপর একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করে। “প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম, হাঁসগুলো হয়তো কিছুক্ষণ পর চলে যাবে,” এমনটাই জানান ঘটনার শিকার এক ছাত্রী, জুরি হ্যারিস। কিন্তু তাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। হাঁসগুলো ক্রমশ আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে।
হাঁসের দল শুধু তাদের তাড়া করেই ক্ষান্ত হয়নি, বরং বাড়ির বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তারা তেড়ে আসত। অবস্থা এমন পর্যায়ে যায় যে, ছাত্রীদের বাড়ি থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। এমনকি তারা পেছনের দরজা দিয়ে অন্য প্রতিবেশীদের বাড়ির উঠোন ব্যবহার করে কোনোরকমে এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। একদিন তো এক প্রতিবেশী হাঁসের আক্রমণের শিকার হয়ে আহত হন। জানা গেছে, হাঁসের আক্রমণে তার শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্নও রয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, তারা জানিয়েছেন, হাঁসের ডিম ফুটে বাচ্চা না হওয়া পর্যন্ত তাদের কিছুই করার নেই। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে হাঁসের ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এরপরই হয়তো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। ততদিন পর্যন্ত, ছাত্রীদের এই অপ্রত্যাশিত ‘বন্দীদশা’ থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো উপায় নেই।
এই ঘটনার একটি মজার দিকও রয়েছে। এক বন্ধু তাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন, হাতে ছিল এক বাক্স ক্রোয়াসাঁ। কিন্তু হাঁসের উৎপাত থেকে বাঁচতে না পেরে সেই ক্রোয়াসাঁগুলো মাটিতে পড়ে যায়। আর হাঁসের দল সেগুলো খাওয়া শুরু করে।
ওয়াটারলুর এই ঘটনা পশু ও মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে ভাবতে শেখায়। বন্য প্রাণীর এমন আচরণ সত্যিই অপ্রত্যাশিত এবং উদ্বেগের কারণ হতে পারে। এখন দেখার বিষয়, হাঁসের দল কবে তাদের এলাকা ছাড়ে, আর ছাত্রীরা কবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল