মার্কিন সিনেটর জেডি ভেন্সের ভ্যাটিকান সফর: আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও অভিবাসন নিয়ে আলোচনা
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর জেডি ভেন্স সম্প্রতি ভ্যাটিকান সফর করেছেন। সেখানে তিনি ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি অফ স্টেট কার্ডিনাল পিয়েত্রো পারোলিন এবং আর্চবিশপ পল গ্যালাঘারের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। আলোচনার মূল বিষয় ছিল আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংকট, বিশেষ করে ইউক্রেন ও গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং অভিবাসন বিষয়ক পরিস্থিতি।
ভ্যাটিকান সূত্রে জানা গেছে, আলোচনাগুলো ছিল খোলামেলা ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে।
বৈঠকে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় হয়, যেখানে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলো, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মানবিক সংকটগুলো বিশেষভাবে আলোচনা করা হয়। এছাড়া, অভিবাসী, শরণার্থী ও কারাবন্দীদের পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয়।
ভ্যাটিকান বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্যাথলিক চার্চের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। বিশেষ করে, দুর্বল মানুষের প্রতি চার্চের মূল্যবান সেবার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়।
জেডি ভেন্স একজন ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী, যিনি ২০১৯ সালে ধর্মান্তরিত হন। তিনি রক্ষণশীল ধারার একটি ক্যাথলিক বুদ্ধিজীবী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত, যাদের অনেকে ‘পোস্ট-লিবারেল’ হিসেবে চিহ্নিত করে।
এই গোষ্ঠীর সদস্যরা গর্ভপাত ও এলজিবিটিকিউ+ অধিকারের মতো বিষয়গুলোতে তাদের রক্ষণশীল দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। তারা মনে করেন, সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজেদের লোক বসিয়ে সমাজের ‘মঙ্গল’ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
আলোচনার পূর্বে, কার্ডিনাল পারোলিন এক সাক্ষাৎকারে জানান, বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি অতীতের তুলনায় ভিন্ন, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে, বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বে, উদ্বেগের কারণ।
সিনেটর ভেন্সের এই ভ্যাটিকান সফরের সময় ইস্টার উইকেন্ড ছিল। তিনি পরিবারের সঙ্গে ইতালির রাজধানী রোমে যান এবং সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় গুড ফ্রাইডের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এরপর তারা সিস্টিন চ্যাপেল পরিদর্শন করেন।
পোপ ফ্রান্সিস এবং সিনেটর ভেন্সের মধ্যে অভিবাসন নীতি ও ট্রাম্প প্রশাসনের গণহারে বিতাড়নের পরিকল্পনা নিয়ে আগে থেকেই মতবিরোধ ছিল। পোপ ফ্রান্সিস অভিবাসীদের প্রতি সহানুভূতিশীল এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে তাঁর দৃঢ় অবস্থান বিভিন্ন সময়ে তুলে ধরেছেন।
এই সফরের প্রেক্ষাপটে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভ্যাটিকান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার সম্পর্ক, বিশেষ করে অভিবাসন নীতি এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে, ভবিষ্যতে কেমন রূপ নেয়, সেদিকে এখন সবার নজর থাকবে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান