মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স সম্প্রতি ভ্যাটিকানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। বৈঠকের মূল বিষয় ছিল অভিবাসন সমস্যা, যা বর্তমানে একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
পোপ ফ্রান্সিসের কঠোর সমালোচনা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতির কড়া জবাবের প্রেক্ষাপটে এই বৈঠকটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
বৈঠকে ভ্যাটিকানের সেক্রেটারি অফ স্টেট কার্ডিনাল পিয়েরো প্যারোলিন এবং সেক্রেটারি ফর রিলেশনস উইথ স্টেটস পল রিচার্ড গ্যালাঘারের সঙ্গে ভ্যান্সের আলোচনা হয়। ভ্যাটিকান বৈঠকের বিষয়টিকে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে যুদ্ধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মানবিক সংকটে জর্জরিত দেশগুলো। এ সময় অভিবাসী, শরণার্থী ও বন্দীদের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
ভ্যাটিকান আরও জানিয়েছে, বৈঠকে ধর্ম ও বিবেকের স্বাধীনতার অধিকার রক্ষার বিষয়ে উভয় পক্ষ তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
উল্লেখ, গত ফেব্রুয়ারিতে পোপ ফ্রান্সিস এক চিঠিতে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির তীব্র নিন্দা করেছিলেন, যা হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করে। পোপের এই পদক্ষেপকে অনেকে অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে একটি কঠোর বার্তা হিসেবেও দেখেছিলেন।
বৈঠকে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্সের পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে সাক্ষাতেরও প্রত্যাশা ছিল, যিনি সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থতা থেকে সেরে উঠেছেন।
তবে পোপের সঙ্গে তার কোনো সাক্ষাৎ হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে ভ্যাটিকান কোনো মন্তব্য করেনি। গত বছরও পোপ ফ্রান্সিস অভিবাসন বিরোধী মনোভাবকে ‘পাগলামি’ হিসেবে বর্ণনা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কট্টর রক্ষণশীলদের সমালোচনা করেছিলেন।
বৈঠক শেষে ভ্যাটিকান বিশেষভাবে মার্কিন ক্যাথলিক চার্চের দুর্বল জনগোষ্ঠীর প্রতি মূল্যবান সেবার কথা উল্লেখ করেছে।
এই বৈঠকের মাধ্যমে অভিবাসন সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভ্যাটিকানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আরও একবার স্পষ্ট হয়েছে।
বিশেষ করে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা থেকে আসা মানুষ ও শরণার্থীদের প্রতি মানবিক সহায়তা প্রদানে ভ্যাটিকান সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে। এই প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভ্যাটিকানের এই আলোচনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা