পুতিনের ইস্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণার মধ্যে কিয়েভের প্রতিক্রিয়া, শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা।
রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধের ময়দানে এবার ইস্টার উৎসবে সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শনিবার মস্কো সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
পুতিনের এই ঘোষণার পর কিয়েভের পক্ষ থেকে এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই পদক্ষেপকে মানবিকতার প্রতি চরম উপহাস হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পুতিন এক বিবৃতিতে জানান, তিনি আশা করছেন ইউক্রেনও এই যুদ্ধবিরতিকে সম্মান জানাবে। তবে, জেলেনস্কি তাৎক্ষণিকভাবে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং একে “মানুষের জীবন নিয়ে খেলার আরেকটি চেষ্টা” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
কিয়েভে রুশ ঘোষণার পরপরই বিমান হামলার সাইরেন বেজে ওঠে। জেলেনস্কি তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “আকাশে ইরানের তৈরি শাহেদ ড্রোনগুলো ইস্টার এবং মানুষের জীবনের প্রতি পুতিনের আসল মনোভাব প্রকাশ করছে।”
ইউক্রেন এর আগেও রাশিয়ার এমন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা মনে করে, যুদ্ধবিরতির আড়ালে রাশিয়া সেনা সমাবেশ সহ নিজেদের কৌশলগত সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করে।
এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতেও কিয়েভ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।
এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো যখন যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়া ধীরে ধীরে তাদের শক্তি বৃদ্ধি করছে। রুশ বাহিনী সীমান্ত অঞ্চল কুরস্কে আরও একটি জনপদ দখলের দাবি করেছে।
একই সময়ে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চলমান শান্তি আলোচনাও কার্যত ভেস্তে যাওয়ার পথে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সতর্ক করে বলেছেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য যদি কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দিনের মধ্যেই এই প্রচেষ্টা থেকে সরে আসবে।
যুদ্ধবিরতির এই ঘোষণা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ইস্টারকে কেন্দ্র করে এসেছে। এই সময়ে উভয় দেশের সাধারণ মানুষ ধর্মীয় উৎসব পালনে ব্যস্ত থাকে।
এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসায় অনেকেই এটিকে স্বাগত জানালেও, কিয়েভের সন্দেহ এর গভীরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, পুতিনের এই পদক্ষেপ একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা তৈরি করতে চাইছে, তেমনই ইউক্রেনের উপর চাপ সৃষ্টির কৌশলও হতে পারে। তবে, যুদ্ধ পরিস্থিতির দ্রুত কোনো পরিবর্তন হবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
তথ্যসূত্র: সিএনএন