রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শনিবার মস্কোর সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন। এটিকে তিনি ‘ইস্টার যুদ্ধবিরতি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
মানবিক কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, কিয়েভ যদি শান্তি চায়, তাহলে তারাও যেন এই যুদ্ধবিরতি অনুসরণ করে।
পুতিনের এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এসেছে, যখন কিয়েভ সহ ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন বাজছিল। যদিও রাশিয়া এর আগেও ২০১৪ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন এই যুদ্ধবিরতি নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সম্ভবত রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। এই খবর পাওয়া গেছে।
এর মাধ্যমে রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে এবং ইউক্রেনকে আলোচনার টেবিলে আসার জন্য চাপ দেওয়া হতে পারে।
২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করে নেয়। এরপর গণভোটের মাধ্যমে এটিকে নিজেদের অংশ করে নেয়।
যদিও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, কোনো দেশ অন্য দেশের ভূখণ্ড দখল করতে পারে না। ক্রিমিয়াকে স্বীকৃতি দেওয়ার এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যদি কোনো শান্তি চুক্তি না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি থেকে সরে আসবে। এর আগে তিনি ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দেশটির খনিজ সম্পদের ভাগ দাবি করেছিলেন।
বর্তমানে লন্ডনে শান্তি আলোচনা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই আলোচনায় এমন একটি চুক্তির চেষ্টা চলছে, যেখানে রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল এবং ক্রিমিয়া নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখবে।
একইসঙ্গে, মস্কোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, ক্রিমিয়াসহ ইউক্রেনের কোনো অংশ রাশিয়াকে দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাশিয়ার সেনারা যদি যুদ্ধ বন্ধ করতে রাজি না হয়, তাহলে আলোচনা ফলপ্রসূ হবে না।
অন্যদিকে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণার মধ্যেই রাশিয়া ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিক এবং অবকাঠামোর ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে। শুক্রবার খারকিভে তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় দুইজন নিহত হয়েছে।
এর আগে, পাম সানডে’তে সুমি শহরে হামলায় শিশুসহ ৩৫ জন নিহত হয়।
রাশিয়া ক্রিমিয়াকে একটি সামরিক কেন্দ্রে পরিণত করেছে, যা ২০১৪ সালে তাদের সামরিক অভিযানের ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে।
ইউক্রেনও ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটিগুলোতে হামলা চালিয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান