শিরোনাম: কাজ হারানো স্বামী, ৬ সন্তানের জনক: সংসারের হাল ধরে ‘গৃহকর্তা’, বদলে গেল দাম্পত্য জীবন
যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরিবারে, যেখানে স্বামী কাজ হারানোর পর সংসারের চিরাচরিত ধারণা পাল্টে যায়। স্ত্রী যখন প্রধান উপার্জনকারী, স্বামী তখন ঘরের দেখাশোনা ও সন্তানদের প্রতিপালনের দায়িত্ব নেন। এই নতুন ভূমিকায় কিভাবে বদলে গেছে তাদের জীবন, সেই গল্প উঠে এসেছে।
ক্যারি জনসন, যিনি এক সময় স্বাস্থ্যখাতে কাজ করতেন, তাঁর চাকরি চলে যাওয়ার পর এই পরিবর্তনের শুরু। ২০১৬ বছর দাম্পত্য জীবনের পর, তাঁদের ছয় সন্তানের সংসারে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শ্যারন জনসন, যিনি আগে গৃহিণী ছিলেন, তিনি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কাজের সঙ্গে যুক্ত।
শ্যারন জানান, “আমার বাচ্চারা যখন প্রথম আমার কণ্ঠ শুনেছিল, তারা সবাই খুব খুশি হয়েছিল, হাততালি দিয়েছিল। আমি কেঁদে ফেলেছিলাম। আমি সবসময় চেয়েছি, আমার ছেলেমেয়েরা এমন নারীদের দেখুক, যারা ক্যারিয়ার তৈরি করেছে এবং গৃহিণী হওয়ার বাইরেও কিছু করেছে।”
অন্যদিকে, ক্যারির এই নতুন পথচলা শুরুতে কঠিন ছিল। স্বাস্থ্য প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী কেরি, তাঁর আগের তিনটি চাকরি হারানোর পর এই পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তিনি বলেন, “মনে হচ্ছিল, হয়তো এইবার আমাদের সবকিছু নতুন করে গুছিয়ে নেওয়ার সময় এসেছে।”
এখন কেরি ঘর-সংসারের দায়িত্ব সামলান, বাচ্চাদের দেখাশোনা করেন এবং তাদের সময় দেন। কেরি জানান, “আমি এখন সন্তানদের আরও ভালোভাবে বুঝতে পারছি, তাদের মেজাজ কেমন, স্কুলে কী হচ্ছে, এইসব বিষয়গুলো এখন আমার নখদর্পণে। এই সুযোগটা আমার কাছে অসাধারণ।”
শ্যারনের মতে, এই পরিবর্তনের ফলে তিনি অনেক বেশি স্বস্তি অনুভব করছেন। আগে সংসারের সব দায়িত্ব তাঁর একার কাঁধে ছিল, এখন তিনি একজন সহযোগী খুঁজে পেয়েছেন। তিনি বলেন, “কেরির সঙ্গে বাচ্চাদের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। এখন আমরা সবাই মিলে একটা পরিবার, যেখানে মা-বাবা এবং সন্তানরা একসঙ্গে সময় কাটাই।”
আর্থিকভাবে কিছু সমস্যা হলেও, শ্যারন মনে করেন এই জীবনযাত্রার মান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “আর্থিক ক্ষতির চেয়ে এখনকার জীবন অনেক বেশি শান্তির।” তাঁদের এই সিদ্ধান্তে পরিবারের সমর্থন ছিল এবং তাঁরা এতে খুবই আনন্দিত।
এই পরিবর্তনের ফলে তাঁদের সন্তানেরা মা’কে টিভিতে দেখলে বা তাঁর কথা শুনলে গর্বিত হয়। শ্যারন বলেন, “আমি কখনো ভাবিনি, আমার সন্তানদের এমন করতে দেখব।”
ভবিষ্যতের জন্য তাঁরা ধীরে ধীরে সবকিছু করছেন। তাঁরা নিশ্চিত নন, এই পরিবর্তন কত দিন টিকবে, তবে তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কেরি বলেন, “আমরা যতক্ষণ পারব, চেষ্টা চালিয়ে যাব।”
শ্যারন মনে করেন, এই অভিজ্ঞতা তাঁদের পরিবারের ধারণা এবং কাজ সম্পর্কে নতুন ধারণা দিয়েছে। তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, আমরা একে অপরের দায়িত্বগুলো ভালোভাবে বুঝতে পারছি এবং এই পরিবর্তনের ফলে আমাদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হয়েছে।”
তথ্য সূত্র: পিপল