ডাল (Lentils) ও মটরশুঁটি (Peas): স্বাস্থ্যকর জীবনের চাবিকাঠি!
বর্তমান যুগে স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ছে, মানুষ এখন খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আগের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রহী। স্বাস্থ্যকর জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো প্রোটিন।
আর এই প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে পারে ডাল ও মটরশুঁটির মতো দারুণ সব খাবার। সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য বিষয়ক একটি উপদেষ্টা কমিটি তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, ডাল ও মটরশুঁটি খাদ্য তালিকায় যোগ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
এই খাবারগুলো প্রোটিন, ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট-এর এক দারুণ উৎস।
আমাদের দেশে ডাল একটি অতি পরিচিত খাদ্য উপাদান, যা বিভিন্ন ধরণের সবজির সঙ্গে মিশিয়ে কিংবা নিরামিষ তরকারি হিসেবে প্রায়ই খাওয়া হয়। বিভিন্ন ধরণের ডালে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, যা শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
বিশেষ করে যারা মাছ মাংস কম খান, তাদের জন্য ডাল হতে পারে প্রোটিনের অন্যতম উৎস। এক কাপ রান্না করা ডালে প্রায় ১২ গ্রামের বেশি প্রোটিন পাওয়া যায়।
যা একজন সাধারণ মানুষের দৈনিক চাহিদার প্রায় ২০ শতাংশ পূরণ করতে পারে।
শুধু প্রোটিনই নয়, ডাল ও মটরশুঁটিতে আরও অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। এগুলিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যালস-এর মতো উপাদান বিদ্যমান, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে।
ইতালির ক্যামেরিনো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডাল “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদানগুলির মধ্যে একটি।” এছাড়াও, মটরশুঁটিতেও রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা হৃদরোগ ও কিডনি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
ডাল ও মটরশুঁটি রান্নার প্রক্রিয়াও খুব সহজ। অন্যান্য ডালের মতো, রান্নার আগে এটি ভিজিয়ে রাখার প্রয়োজন হয় না। বিভিন্ন সবজির সঙ্গে মিশিয়ে সুস্বাদু সব তরকারি তৈরি করা যায়।
এছাড়া, এটি দিয়ে তৈরি করা যায় স্যুপ, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। মটরশুঁটি দিয়ে তৈরি করা যায় বিভিন্ন ধরণের মুখরোচক পদ, যা খাদ্য তালিকায় যোগ করতে পারে ভিন্ন স্বাদ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডাল ও মটরশুঁটি দামে সস্তা এবং সহজলভ্য হওয়ায় এটি একটি চমৎকার খাদ্য উপাদান। তাই, স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য খাদ্য তালিকায় ডাল ও মটরশুঁটি যোগ করা এখন সময়ের দাবি।
স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির এই সুপারিশ নিঃসন্দেহে খাদ্য এবং পুষ্টি বিষয়ক আলোচনাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক