পোপ ফ্রান্সিসের প্রয়াণ: সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় শেষ শ্রদ্ধা, বিশ্বনেতাদের আগমন।
ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস, যিনি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত ছিলেন, সোমবার ৮৮ বছর বয়সে মারা গেছেন। তার প্রয়াণে বিশ্বজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, আর তার শেষকৃত্যানুষ্ঠানে যোগ দিতে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
ভ্যাটিকান সিটি সূত্রে খবর, প্রয়াত পোপের মরদেহ বুধবার সকালে সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় নেওয়া হবে, যেখানে সাধারণ মানুষ তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।
পোপের মরদেহ শায়িত অবস্থায় সেখানে তিন দিন রাখা হবে। এরপর শনিবার সকালে তার শেষকৃত্যানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ লেবার নেতা কেইর স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ আরও অনেক বিশ্বনেতার এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
পোপ ফ্রান্সিস তার ১২ বছরের শাসনামলে দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের প্রতি বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন। তিনি প্রায়ই রক্ষণশীলদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন, তবে সংস্কারের পক্ষে ছিলেন অবিচল।
তার মরদেহ সাদা কাপড়ে আচ্ছাদিত করে সেন্ট পিটার্স বাসিলিকার কেন্দ্রীয় প্রবেশপথ দিয়ে নেওয়া হবে। সেখানে কার্ডিনাল ও অন্যান্য ধর্মীয় নেতারা প্রার্থনা করবেন। এরপর সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য তা উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
ইতালির সরকার শেষকৃত্যানুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। এই অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এরই মধ্যে ব্রাজিলের মিক্যালে সালেস নামের একজন ভক্ত সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় এসে জানিয়েছেন, পোপ ফ্রান্সিস একজন মহান ধর্মগুরু এবং সবার বন্ধু ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার অমিত কুকরেজা বলেছেন, “পোপ সারা বিশ্বে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন।”
পোপ ফ্রান্সিসকে তার পূর্বসূরীদের মতো সেন্ট পিটার্স বাসিলিকায় সমাধিস্থ না করে, রোমের একটি বিশেষ বেসিলিকা, সান্টা মারিয়া ম্যাজোরে সমাহিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সেখানে তার নামের একটি সাধারণ ল্যাটিন ফলক থাকবে।
পোপের মৃত্যুর পর এখন নতুন পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, যা ‘কনক্লেভ’ নামে পরিচিত। আগামী ৬ই মের আগে এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
এই সময়ের মধ্যে, ক্যাথলিক চার্চের প্রশাসনিক কাজকর্ম দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করবেন ক্যামেরলেঙ্গো কার্ডিনাল কেভিন ফারেল। নতুন পোপ নির্বাচনের দৌড়ে ফিলিপাইনের লুইস আন্তোনিও ট্যাগলে এবং ইতালির পিয়েত্রো পারোলিন-এর নাম শোনা যাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।