সংকটে বন্ধুর পাশে দাঁড়ানো কতটা কঠিন: এক তরুণীর অভিজ্ঞতা
বন্ধুত্ব একটি অমূল্য সম্পর্ক। তবে, কঠিন সময়ে এই সম্পর্কের গভীরতা কতটুকু, তা নিয়ে অনেক সময় প্রশ্ন ওঠে।
সম্প্রতি, এমনই একটি ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা সৃষ্টি করেছে, যেখানে এক তরুণীর অভিজ্ঞতা বন্ধুত্বের সংজ্ঞা নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে।
ঘটনার সূত্রপাত হয়, যখন ২৪ বছর বয়সী এক তরুণী, যিনি পেশায় একজন ফ্রিল্যান্সার, তার প্রাক্তন কলেজ বন্ধুকে কয়েক দিনের জন্য তার অ্যাপার্টমেন্টে থাকার প্রস্তাব দেন।
বন্ধুটি সম্প্রতি চাকরি হারিয়েছিলেন এবং প্রেমিকের সাথেও বিচ্ছেদ ঘটেছিল।
তরুণী বন্ধুকে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন, তাই তাকে আশ্রয় দিতে রাজি হন।
কিন্তু কয়েক দিনের পরিবর্তে সেই আশ্রয় গিয়ে দাঁড়ায় তিন সপ্তাহে।
শুরুর দিকে সবকিছু স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু ধীরে ধীরে তরুণীটির মনে হতে শুরু করে, তিনি যেন এক অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির শিকার।
বন্ধুটি তার অ্যাপার্টমেন্টে থাকাকালীন কোনো প্রকার আর্থিক সহায়তা করেননি, বরং তরুণীর খাবার এবং অন্যান্য জিনিস ব্যবহার করতে শুরু করেন।
সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল, তরুণীর কাজের সময় ঘন ঘন বাধা সৃষ্টি করা।
তিনি যখন বাড়িতে বসে কাজ করতেন, তখন বন্ধুটির ব্যক্তিগত সমস্যাগুলো আলোচনা করতে গিয়ে কাজের পরিবেশ নষ্ট করতেন।
একদিন, তরুণীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অনলাইন মিটিং ছিল, এবং সেই সময় তার বন্ধু জোরে গান বাজাচ্ছিল এবং ফোনে কথা বলছিল।
মিটিংয়ে তরুণীর বস বিষয়টি শুনতে পান এবং তিনি বিব্রত হন।
এরপর তরুণীটি তার বন্ধুকে দ্রুত চলে যেতে বলেন এবং টিকিট কেনার প্রস্তাব দেন।
কিন্তু বন্ধুটি এই সিদ্ধান্তে হতাশ হন এবং তরুণীকে ‘হৃদয়হীন’ বলে অভিহিত করেন।
তিনি সামাজিক মাধ্যমে এমন কিছু পোস্ট করতে শুরু করেন, যেখানে বন্ধুদের কঠিন সময়ে পাশে থাকার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলা হচ্ছিল।
তরুণীটি জানান, তিনি তার বন্ধুর খারাপ অবস্থার জন্য খারাপ অনুভব করছেন, কিন্তু একই সাথে তিনি মানসিক চাপে ছিলেন এবং ব্যক্তিগত পরিসর রক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছিলেন।
এই ঘটনার পর, তরুণীটি তার দ্বিধা নিয়ে “অ্যাম আই দ্য এ——?” নামক একটি রেডডিট ফোরামে প্রশ্ন করেন।
সেখানে অনেকেই তার পক্ষে মত দেন এবং বন্ধুদের কাছ থেকে অতিরিক্ত প্রত্যাশা করার বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানান।
এই ঘটনাটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, বন্ধুত্বের সম্পর্ক কতটা জটিল হতে পারে।
বিশেষ করে, যখন একজন বন্ধু কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যান, তখন আমাদের সহানুভূতিশীল হওয়া প্রয়োজন।
তবে, সম্পর্কের ক্ষেত্রে সুস্থ সীমা বজায় রাখাটাও জরুরি।
কাউকে সাহায্য করার নামে নিজের জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটানো বা মানসিক চাপে পড়া কখনোই কাম্য নয়।
তথ্য সূত্র: পিপল