শিরোনাম: স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা, ওজন কমানোর ঔষধ ব্যবহারের কথা স্বীকার করায় বিতর্ক
সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা বিষয়ক পরামর্শদাতা জানেল রোনারের ওজন কমানোর ওষুধ ব্যবহারের কথা স্বীকার করার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। টিকটকে ৫২ লক্ষ ফলোয়ারের এই প্রভাবশালী তার অনুসারীদের কাছে ওজন কমানোর বিভিন্ন উপায় বাতলেছিলেন এবং সেগুলোর কোর্সও বিক্রি করতেন।
ইউটিউবে ২৩শে এপ্রিল প্রকাশিত একটি ভিডিওতে, ৩৭ বছর বয়সী রোনর জানান, অন্যান্য পদ্ধতি কাজ না করায় তিনি ওজন কমানোর জন্য GLP-1 ওষুধ ব্যবহার করছেন। ওজেম্পিক, উইগোভি এবং মাউন্জারোর মতো সেমাগ্লুটাইড ওষুধগুলি GLP-1 শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এগুলির ব্যবহার বেড়েছে।
ভিডিওতে রোনর আরও জানান, “গত এক বছরে, আমি আমার স্বাস্থ্যের জন্য কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা শুরু করি এবং আমরা আমার পরিকল্পনায় একটি GLP-1 যোগ করার সিদ্ধান্ত নিই।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি সবকিছু চেষ্টা করেছি – কিটো ডায়েট, ম্যাক্রো, ব্যায়াম, জীবনযাত্রায় পরিবর্তন।
তবে রোনরের এই ভিডিও প্রকাশের পর তার অনুসারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা অভিযোগ করেন, রোনর তাদের “বিপথগামী” করেছেন, কারণ তিনি ওজন কমানোর প্রোগ্রাম বিষয়ক কোর্স বিক্রি করতেন, যেগুলোর প্রতিটির মূল্য ছিল প্রায় ২০,০০০ টাকার বেশি।
একজন মন্তব্যকারী লেখেন, “আসলে GLP-1 ব্যবহার করা বা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ডাক্তারের সাহায্য নেওয়ার চেয়ে বড় সমস্যা হল, নিজের ওজন কমানোর আসল কারণ গোপন রেখে মানুষের কাছ থেকে ওজন কমানোর প্রোগ্রামের নামে টাকা নেওয়া।
পরের দিন, ২৪শে এপ্রিল, রোনর টিকটকে একটি ভিডিও পোস্ট করে ক্ষমা চেয়ে এই বিতর্কের জবাব দেন। তিনি বলেন, “আমি সহানুভূতি চাইছি না, আমি শুধু সঠিক কাজটি করার চেষ্টা করছি এবং সৎ থাকতে চাই।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমি চাইলে এই বিষয়টি গোপন রাখতে পারতাম, বছরের পর বছর ধরে কাউকে কিছু না জানিয়ে যেতে পারতাম, কিন্তু আমি তা করতে চাই না।
রোনর আরও জানান, যারা গত ১১ মাসে তার কোর্স কিনেছেন, তাদের সবাইকে তিনি টাকা ফেরত দেবেন।
এই ঘটনার জেরে স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা বিষয়ক পরামর্শদাতাদের স্বচ্ছতা এবং তাদের দেওয়া তথ্যের সত্যতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে, যেখানে তথ্যের অবাধ প্রবাহ রয়েছে, সেখানে স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ দেওয়ার ক্ষেত্রে আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।
মানুষকে ভুল পথে চালিত করা বা তাদের কাছ থেকে মিথ্যা তথ্য গোপন করে অর্থ উপার্জন করা অনৈতিক। বিশেষ করে, যখন এই ধরনের পরামর্শের সঙ্গে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয় জড়িত থাকে, তখন প্রত্যেক পরামর্শদাতার উচিত তার দেওয়া তথ্যের বিষয়ে সম্পূর্ণ সততা বজায় রাখা।
তথ্য সূত্র: পিপল