এক রহস্যময়ীর জীবন: হারানো প্রেমপত্র থেকে নির্মিত ‘দ্য এক্সট্রাঅর্ডিনারি মিস ফ্লাওয়ার’
২০১৯ সালে লন্ডনের এক ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয় একটি স্যুটকেস।
আর সেই স্যুটকেসে পাওয়া গিয়েছিল অসংখ্য প্রেমপত্র, যা এক নারীর প্রতি নিবেদিত ছিল।
তিনি হলেন জেরাল্ডিন ফ্লাওয়ার।
ষাটের দশক এবং সত্তরের দশকে বিভিন্ন পুরুষের লেখা সেই চিঠিগুলো যেন এক একটি অমূল্য দলিল, যা উন্মোচন করে এক নারীর সম্পূর্ণ অজানা জীবন।
আর এই প্রেমপত্রগুলোই বর্তমানে একটি নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে, যার নাম ‘দ্য এক্সট্রাঅর্ডিনারি মিস ফ্লাওয়ার’।
জেরাল্ডিন ফ্লাওয়ার নামের এই নারীর জীবন ছিল এক গভীর রহস্য।
অস্ট্রেলিয়ায় বেড়ে ওঠা এই নারী পরবর্তীতে পাড়ি জমান লন্ডনে।
সেখানে তিনি ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ পত্রিকায় সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করতেন।
কাজের ফাঁকে সাংবাদিকতার প্রতিও ছিল তাঁর ঝোঁক।
তিনি ছিলেন একজন অভিযাত্রী, যিনি ভালোবাসতেন বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করতে।
তাঁর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের কারণে বহু পুরুষ তাঁর প্রেমে হাবুডুবু খেতেন।
সেইসব প্রেমিকদের আবেগঘন ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ছিল এই চিঠিগুলো।
চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন ইয়ান ফরসিথ এবং জেন পোলার্ড।
এর আগে তাঁরা ২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘টোয়েন্টি থাউজেন্ড ডেজ অন আর্থ’ নামের একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন, যেখানে প্রধান চরিত্রে ছিলেন নিক কেভ।
নতুন এই চলচ্চিত্রেও নিক কেভের উপস্থিতি রয়েছে, যেখানে তাঁকে কয়েকটি চিঠি পাঠ করতে শোনা যায়।
এছাড়াও, আইসল্যান্ডের শিল্পী এমিলিয়ানা তোরিনি এই চলচ্চিত্রের জন্য ‘মিস ফ্লাওয়ার’ নামে একটি অ্যালবাম তৈরি করেছেন।
ছবিতে অভিনয় করেছেন ক্যারোলিন ক্যাটজ, যিনি জেরাল্ডিন ফ্লাওয়ারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
চলচ্চিত্রটি একটি বিশেষ ধরনের শৈলী অনুসরণ করে নির্মিত হয়েছে।
গানের সাথে বিভিন্ন দৃশ্য এবং আধুনিক নাচের মিশেলে এটি দর্শকদের জন্য এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে।
ছবিটির বিষয়বস্তু, নির্মাণশৈলী এবং এর গভীরতা দর্শকদের মন জয় করবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
তবে, চলচ্চিত্রটি শুধু একটি বায়োগ্রাফি নয়, বরং এটি ভালোবাসার এক অন্যরকম গল্প।
প্রেমপত্রগুলোতে প্রেমিকের গভীর অনুভূতি, ভালোলাগা, এমনকি কিছু দুর্বলতাও ফুটে উঠেছে।
ছবির কিছু সংলাপ যেমন, “আমি যেন প্রাগের কোনো মাদকাসক্তের মতো, তোমার থেকে দূরে থাকতে পারছি না”, ভালোবাসার তীব্রতা প্রকাশ করে।
‘দ্য এক্সট্রাঅর্ডিনারি মিস ফ্লাওয়ার’ চলচ্চিত্রটি ৯ই মে থেকে যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডের সিনেমা হলগুলোতে মুক্তি পেয়েছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।