মাদারীপুর থেকে গোলাম আজম ইরাদ।
নিজেকে ইসলামের পথে পরিচালিত করার জন্য আগে নিজের জীবনে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। ইসলাম শুধুমাত্র নামাজ, রোজা, হজ্ব ও যাকাতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। প্রতিটি কাজ ও চিন্তায় ইসলামের নিয়ম অনুসরণ করাই প্রকৃত মুসলিমের দায়িত্ব। ইসলামের বাস্তবিক প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
নফস ও লোভের বিরুদ্ধে সংগ্রামের আলোচনা করতে গিয়ে পীর সাহেব আলী আহম্মদ চৌধুরী তার বক্তব্যে নফসের উপর নিয়ন্ত্রণ ও লোভের বিরুদ্ধে মুজাহাদার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “নফস এমন একটি শক্তি যা মানুষকে শয়তানের পথে পরিচালিত করতে চায়। লোভ হলো সেই ফাঁদ, যা মানুষকে হারামের পথে আকৃষ্ট করে।” তাই আমাদের নিজেদের নফসের বিরুদ্ধে নিয়মিত আত্মসংযম ও আল্লাহর ভয়ে নিয়ন্ত্রিত থাকা উচিত।
আখলাকের পরিবর্তনের আহ্বান রেখে পীর সাহেব আরও বলেন, “আখলাক বা চরিত্র মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। একজন মুসলিমের চরিত্র তার ঈমানের প্রতিফলন।” আমাদের নিজেদের আখলাক পরিবর্তনের মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্যকে প্রকাশ করতে হবে। অন্যথায়, আমরা ইসলামের প্রকৃত আদর্শ তুলে ধরতে ব্যর্থ হবো।
আল্লাহর পথে চলার তাগিদ দিতে গিয়ে আলোচনায়
পীর সাহেব আল্লাহর পথে চলার গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, “রাসুলুল্লাহ (সা.) এর আদর্শই আমাদের জীবন চলার পাথেয়। আল্লাহ ও রাসুলের দেখানো পথে না চললে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবো।” তিনি প্রত্যেককে আল্লাহভীতি অন্তরে জাগ্রত করার আহ্বান জানান। আল্লাহর ভয়ই মানুষকে পাপ থেকে বিরত রাখে এবং সৎপথে চলতে সাহায্য করে।
পীর সাহেব তার বক্তব্যে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, “হারাম থেকে কোনো প্রকৃত শান্তি বা আরাম পাওয়া সম্ভব নয়। এটি শুধুমাত্র অস্থায়ী মিথ্যা সুখ প্রদান করে, যা আখিরাতে ধ্বংস ডেকে আনে।” তিনি প্রত্যেককে হালাল রুজির পথে থাকতে এবং হারাম থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। পীর সাহেব মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বাদ মাগরিব বয়ান রাখতে গিয়ে এই আলোচনা করেন।
১৬,১৭, এবং ১৮ নভেম্বর তিনদিনব্যাপী এই বাৎসরিক মাহফিলে পীর সাহেব আলী আহম্মদ চৌধুরীসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমরা ইসলামের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। এই মাহফিলের মূল বার্তা ছিল, “নিজেকে ইসলামের আদলে গড়ে তোলা এবং সমাজ ও রাষ্ট্রে ইসলামের প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা।”
আমাদের দায়িত্ব হলো আল্লাহর দেওয়া শিক্ষা এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শে নিজেদের জীবন পরিচালিত করা। এতে দুনিয়া ও আখিরাত উভয়ক্ষেত্রেই সাফল্য লাভ সম্ভব।