লন্ডনের মঞ্চে সাড়া জাগানো একটি নাটক, ‘অ্যান ওক ট্রি’। নাট্যকার ও অভিনেতা টিম ক্রাউচ-এর এই সৃষ্টি শোক, গল্প বলার কৌশল এবং অভিনয়ের মায়া নিয়ে তৈরি। সম্প্রতি, ইয়ং ভিক থিয়েটারে এর প্রদর্শনী হয়েছে।
একজন অতিথি অভিনেতা/অভিনেত্রীর সাথে ক্রাউচের অভিনব উপস্থাপনা দর্শকদের মন জয় করেছে।
‘অ্যান ওক ট্রি’ নাটকের মূল ধারণাটি বেশ অভিনব। এখানে, ক্রাউচ-এর সাথে মঞ্চে আসা অতিথি অভিনেতা/অভিনেত্রী আগে থেকে চিত্রনাট্য সম্পর্কে কিছুই জানেন না।
প্রতিটি দৃশ্যের সংলাপ তারা দর্শক সারির সামনেই পান, যা নাটকটিকে আরো জীবন্ত করে তোলে। দর্শক হিসেবে, আমরা গল্পের মোড় ঘোরানো এবং অভিনেতাদের অনুভূতির সাক্ষী হই।
এই নাটকের মূল আকর্ষণ হলো এর পরীক্ষামূলক শৈলী। এটি প্রচলিত নাটকের ধারণা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
নাটকটি তৈরি হয়েছে ১৯৮৩ সালের মাইকেল ক্রেইগ-মার্টিনের একটি শিল্পকর্ম থেকে, যেখানে একটি গ্লাসের জলকে ওক গাছের সাথে তুলনা করা হয়েছিল।
ক্রাউচ এই ধারণা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মঞ্চে একটি পিয়ানো টুলকে ওক গাছ এবং একটি মেয়েকে ওক গাছের সাথে তুলনা করেন। এর মাধ্যমে তিনি দর্শকদের উপলব্ধির জগৎকে নতুনভাবে নাড়া দেন।
গল্পটি মূলত শোকের অনুভূতি নিয়ে। একজন মানুষ যখন প্রিয়জনকে হারায়, তখন তার মধ্যে যে গভীর শূন্যতা তৈরি হয়, সেই অনুভূতিগুলো নাটকের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
গল্পের এই গভীরতা দর্শকদের হৃদয়ে দাগ কাটে।
প্রতি রাতের অনুষ্ঠানে অতিথি অভিনেতা/অভিনেত্রী ভিন্ন হওয়ায়, প্রতিটি পরিবেশনা এক একটি নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে।
এই নাটকে জেসী বাকলি-র অভিনয় বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে। তার গভীর আবেগ এবং সংলাপ বলার ধরন দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
নাটকের কেন্দ্রে থাকা ক্রাউচ যেন একজন জাদুকর, যিনি তার কৌশল দেখিয়ে দেন। তিনি দর্শকদের জানান, এটি নিছক অভিনয়, তবুও আমরা এর মায়া কাটিয়ে উঠতে পারি না।
তিনি যেন দর্শকদের সামনেই থিয়েটার তৈরির প্রক্রিয়াটি উন্মোচন করেন।
এই ধরনের নিরীক্ষামূলক নাটক আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে খুব একটা দেখা যায় না। তবে, শোক এবং ভালোবাসার মতো মানবিক অনুভূতিগুলো সব সংস্কৃতিতেই একইভাবে প্রাসঙ্গিক।
‘অ্যান ওক ট্রি’ একটি অসাধারণ সৃষ্টি, যা দর্শকদের চিরাচরিত নাটকের ধারণা থেকে বের করে আনে এবং নতুন কিছু অনুভব করতে সাহায্য করে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান