হলিউডের প্রভাবশালী প্রযোজক হার্ভে উইনস্টাইনের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের অভিযোগগুলো নিয়ে নির্মিত সিনেমা ‘শি সেড’-এ অভিনয়ের পেছনে নিজের একটি অভিজ্ঞতার কথা জানালেন অভিনেত্রী প্যাট্রিসিয়া ক্লার্কসন।
২০০০ সালের অস্কারের আসরে উইনস্টাইনের সঙ্গে হওয়া তিক্ত এক ঘটনার কথা সম্প্রতি তিনি জানান।
প্যাট্রিসিয়া ক্লার্কসন জানান, সে সময় তাঁর দুটি ছবি, ‘দ্য স্টেশন এজেন্ট’ ও ‘পিসেস অফ এপ্রিল’–এর জন্য পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
ছবি দুটির পুরস্কারের প্রচারণার পরিকল্পনা করছিলেন উইনস্টাইন।
ক্লার্কসন বলেন, মিরাম্যাক্স-এর প্রধান হিসেবে উইনস্টাইন চেয়েছিলেন, ক্লার্কসনকে সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে মনোনয়ন পেতে, যদিও তিনি ‘দ্য স্টেশন এজেন্ট’ ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
ক্লার্কসন জানান, তিনি উইনস্টাইনের এই প্রস্তাবে রাজি হননি।
তিনি বলেন, “আমি এমনটা একদম পছন্দ করি না, যখন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা ভুল বিভাগে নিজেদের নাম লেখান।
যখন আপনি পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেন, তখন তা হওয়া উচিত, কিন্তু প্রধান চরিত্রে থাকলে কঠিন বিভাগে লড়তে হয়।
আমি ‘স্টেশন এজেন্ট’-এ প্রধান চরিত্রে ছিলাম, তাই আমি উইনস্টাইনকে সরাসরি জানিয়ে দিই, আমি পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে যাব না।”
অভিনেত্রী আরও জানান, ‘পিসেস অফ এপ্রিল’-এ তিনি পার্শ্ব চরিত্রে ছিলেন, যেখানে কেটি হোমসের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল।
তাই উইনস্টাইনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার ক্ষেত্রে এটিও তাঁর একটি কারণ ছিল।
ক্লার্কসন স্মরণ করে বলেন, “আমি হার্ভের বিরুদ্ধে গিয়েছিলাম।
তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন, এরপর থেকে আমি আর কোনো কাজ পাব না।”
পরবর্তীতে ‘পিসেস অফ এপ্রিল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ক্লার্কসন সেরা পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে মনোনয়ন পেলেও অস্কার জেতেন ‘কোল্ড মাউন্টেন’ ছবির জন্য রেনে জেলওয়েগার।
২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘শি সেড’ ছবিতে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সম্পাদক রেবেকা করব্যাট চরিত্রে অভিনয় করার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ক্লার্কসন বলেন উইনস্টাইনের সঙ্গে হওয়া সেই খারাপ অভিজ্ঞতা তাঁকে এই চরিত্রে অভিনয় করতে অনুপ্রাণিত করেছে।
তবে ক্লার্কসন আরও যোগ করেন, প্রযোজকের সঙ্গে তাঁর অভিজ্ঞতা কঠিন ও ভয়ানক হলেও, অনেক নারীর তুলনায় এটি ‘নগণ্য’ ছিল, যাঁরা উইনস্টাইনের দ্বারা আরও বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
বর্তমানে উইনস্টাইন যৌন নিপীড়নের দায়ে কারাবন্দী রয়েছেন।
২০২০ সালে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে ২৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
যদিও নিউইয়র্কের একটি আদালত পরে সেই রায় বাতিল করে দেয় এবং বর্তমানে তাঁর পুনবিচার চলছে।
ক্যালিফোর্নিয়ার একটি আদালতে যৌন অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় উইনস্টাইন এখনো কারাগারে আছেন।
তিনি বর্তমানে নিউইয়র্কের রাইকার্স আইল্যান্ডে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন।
তথ্য সূত্র: পিপল