লন্ডনের ন্যাশনাল গ্যালারি, ইউরোপীয় শিল্পকলার এক বিশাল ভান্ডার, যা বিশ্বজুড়ে শিল্প প্রেমীদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত। সম্প্রতি, গ্যালারিটি তাদের স্থায়ী সংগ্রহশালা নতুনভাবে সাজিয়েছে, যা দর্শকদের জন্য শিল্পের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
এই পুনর্গঠন “আর্টের বিস্ময়” নামে পরিচিত এবং ১০ই মে থেকে এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।
গ্যালারিটি মধ্যযুগ থেকে আধুনিকতা পর্যন্ত ইউরোপীয় শিল্পকলার এক বিস্তৃত চিত্র উপস্থাপন করে। নতুন বিন্যাসে ফ্লেমিশ শিল্পী ভ্যান আইকের কাজের মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয়, যিনি রেনেসাঁর অগ্রদূত ছিলেন।
এরপর লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, যিনি শিল্পকলার জগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, তাঁর বিখ্যাত ‘ভার্জিন অফ দ্য রকস’ এবং ‘বার্লিংটন হাউস কার্টুন’ এর মতো মাস্টারপিস দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। এই অংশে দর্শকদের জন্য যেন এক নতুন অভিজ্ঞতা অপেক্ষা করে।
গ্যালারির এই নতুন প্রদর্শনীতে টাইটান, মোনে-র মতো বিখ্যাত শিল্পীদের নিজস্ব স্থান রয়েছে, যেখানে তাদের শ্রেষ্ঠ কাজগুলো বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও, হলবাইন, ব্রুয়েগেল, বস এবং ম্যাটসি-র মত শিল্পীদের কাজগুলোও দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
প্রতিকৃতি শিল্পের বিবর্তন এবং মানুষের ভেতরের অনুভূতির প্রকাশ এই প্রদর্শনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ১৬ শতাব্দীর ইউরোপে প্রতিকৃতি কীভাবে আত্ম-অনুসন্ধানের এক শক্তিশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছিল, তা এখানে স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
গ্যালারির হলগুলোতে কানালত্তোর মতো শিল্পীর কাজগুলো দর্শকদের মন জয় করে নেয়। এখানকার প্রদর্শনীগুলোতে শিল্পকর্মের গভীরতা এবং আবেগ দর্শকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে।
বিশেষ করে, হোগার্থ এবং গেইনসবোরোর কাজগুলো দর্শকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে। গেইনসবোরোর আঁকা ‘দ্য পেইন্টার্স ডটার্স চেজিং আ বাটারফ্লাই’ এর মতো ছবিগুলো দর্শকদের হৃদয়ে গভীর দাগ কাটে।
রেঁব্রা-র প্রতিকৃতিগুলো, বিশেষ করে তাঁর ৬৩ বছর বয়সের আত্মপ্রতিকৃতি, গভীরতা এবং অনুভূতির এক অসাধারণ উদাহরণ।
এই নতুন প্রদর্শনীটি শুধু একটি সংগ্রহশালা নয়, বরং শিল্পকলার এক আনন্দময় যাত্রা। এখানে আসা দর্শকরা শিল্পের বিচিত্র রূপ, বিবর্তন এবং গভীরতা অনুভব করতে পারবে।
ন্যাশনাল গ্যালারির এই পুনর্গঠন ইউরোপীয় শিল্পকলার ইতিহাসকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছে, যা দর্শকদের জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান