ভারতের এক ইউটিউবারকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যিনি ভ্রমণ বিষয়ক ভিডিও তৈরি করেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করছিলেন। দেশটির নিরাপত্তা সংস্থা এই তথ্য জানিয়েছে।
অভিযুক্ত ইউটিউবারের নাম জ্যোতি মালহোত্রা। হরিয়ানা রাজ্যের বাসিন্দা মালহোত্রার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সাথে সংবেদনশীল তথ্য আদান-প্রদানের অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যার কয়েক দিন পরেই এই গ্রেপ্তার হয়। মালহোত্রাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেছে, তিনি পাকিস্তানি এক গোয়েন্দা কর্মকর্তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন।
ওই কর্মকর্তা তাকে ‘ইসলামাবাদের সম্পদ’ হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন। মালহোত্রা নিয়মিতভাবে তার ভ্রমণ বিষয়ক ভিডিও তৈরি করতেন এবং ইউটিউবে আপলোড করতেন। তার চ্যানেলে প্রায় চার লক্ষ গ্রাহক রয়েছে।
পুলিশ সুপারিনটেনডেন্ট শশাঙ্ক কুমার সাওয়ান জানান, মালহোত্রা তার ভিডিওতে ভিউ, ফলোয়ার এবং আকর্ষণীয় কনটেন্টের জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। এমনকি তিনি ‘স্পন্সরড ট্রিপ’-এর অংশ হিসেবে পাকিস্তান ভ্রমণ করেছেন বলেও জানা গেছে।
এছাড়া, অন্যান্য ইউটিউবারদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল, যাদের সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের সম্পর্ক ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, মালহোত্রার কাছে সরাসরি কোনো সামরিক বা প্রতিরক্ষা বিষয়ক গোপন তথ্য ছিল না। তবে, তার আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং তার ভ্রমণের বিস্তারিত তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
এদিকে, মালহোত্রার বাবা জানিয়েছেন, তিনি মেয়ের পাকিস্তান ভ্রমণের বিষয়ে কিছুই জানতেন না। তার মেয়ে সাধারণত বাড়িতে ছোট ভিডিও তৈরি করত। এর আগে তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মালহোত্রা যথাযথ অনুমতি নিয়েই পাকিস্তান গিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক বেশ কয়েক বছর ধরেই খারাপ যাচ্ছে। কাশ্মীর নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিবাদ রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে সীমান্তে উত্তেজনা বেড়েছে।
এর আগে, ভারতে কাশ্মীর অঞ্চলে পর্যটকদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল, যার জেরে দুই দেশের মধ্যে সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি পায়। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে, যদিও পাকিস্তান তা অস্বীকার করে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে, পাঞ্জাব রাজ্যেও আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা পাকিস্তানের কাছে ‘সংবেদনশীল সামরিক তথ্য’ পাচার করছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর গতিবিধি এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলির গোপন তথ্য জানানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে ভারতের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’-এর অধীনে ব্যবস্থা নিচ্ছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।