ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পরমাণু কার্যক্রম বন্ধের যে দাবি জানানো হয়েছে, সেটিকে ‘অর্থহীন’ বলে উল্লেখ করেছেন। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরমাণু বিষয়ক আলোচনা যখন একটি সংকটপূর্ণ পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে, ঠিক তখনই খামেনির এই মন্তব্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
গত কয়েক মাস ধরে ওমানের মধ্যস্থতায় এই দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলছে, যার মূল উদ্দেশ্য হলো ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে দেশটির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা। যদিও উভয় পক্ষের মধ্যে মতপার্থক্যের কারণে আলোচনার পরবর্তী ধাপ ভেস্তে যাওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে, যা সম্ভবত ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার আগের মেয়াদে ২০১৫ সালের জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিওপিএ) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। ক্ষমতা ফিরে আসার পর, বর্তমান মার্কিন প্রশাসন ইরানের উপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের নীতি পুনর্বহাল করেছে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে জানায়, আলোচনা দ্রুত ফলপ্রসূ না হলে খারাপ কিছু ঘটতে পারে।
ইরান এখনো পর্যন্ত ৬০ শতাংশ পর্যন্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে, যা ২০১৫ সালের চুক্তিতে নির্ধারিত ৩.৬৭ শতাংশের অনেক বেশি, তবে একটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় ৯০ শতাংশের চেয়ে কম। তেহরান বরাবরই বলে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে এবং এটি কোনো আলোচনার বিষয় নয়।
তবে, মার্কিন আলোচক স্টিভ উইটকফ এই কর্মসূচি অব্যাহত রাখাকে ‘লাল রেখা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি রবিবার পুনরায় উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র “এক শতাংশেরও বেশি সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা” অনুমোদন করতে পারে না। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি রবিবার বলেছেন, ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে, সেই বিষয়ে একটি চুক্তি “খুব কাছেই”।
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “চুক্তি হোক বা না হোক, ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালিয়ে যাবে।”
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, উভয় দেশের মধ্যে আলোচনা এখনো পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতার মন্তব্য সংকট আরও বাড়িয়ে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা