যুদ্ধ কি তবে থামবে? রাশিয়া-ইউক্রেন সরাসরি আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বিশ্বজুড়ে শান্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে অনেক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, এই আলোচনা আসলে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেয়ে রাশিয়ার কৌশলগত ফায়দার পথ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সরাসরি এই আলোচনার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি দ্রুত যুদ্ধবিরতি এবং যুদ্ধের অবসানের ব্যাপারে আশাবাদী। কিন্তু ইউরোপ ও ইউক্রেনের বিশেষজ্ঞরা ভিন্নমত পোষণ করেন।
তাদের মতে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্ভবত আলোচনার আড়ালে সময়ক্ষেপণ করছেন। এর মাধ্যমে তিনি একদিকে যেমন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যাচ্ছেন, তেমনি ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
পর্যবেক্ষকদের ধারণা, পুতিন হয়তো আলোচনার টেবিলে বসার মাধ্যমে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে আলোচনার অযোগ্য প্রমাণ করতে চাইছেন। সেইসঙ্গে তিনি আলোচনার নামে নতুন করে সেনা সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা যুদ্ধকে আরও দীর্ঘায়িত করতে পারে।
রাশিয়া প্রতি মাসে প্রায় ৫০ হাজার নতুন সেনা নিয়োগ করছে এবং তাদের প্রশিক্ষণের জন্য সময় নিচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তবে অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছাড়া এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার উপর তেমন প্রভাব ফেলবে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, পুতিন আলোচনার মাধ্যমে পশ্চিমা দেশগুলোকে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া থেকে বিরত রাখতে চাইছেন। এর মাধ্যমে তিনি ইউক্রেনের আরও বেশি ভূখণ্ড দখলের সুযোগ নিতে পারেন।
অন্যদিকে, ক্রেমলিনপন্থী বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই আলোচনা ইউক্রেনকে রাশিয়ার শর্ত মেনে নিতে বাধ্য করতে পারে।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইউক্রেনকে পশ্চিমা দেশগুলো সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা দিয়ে আসছে। তবে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে শান্তির সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় অনেক পর্যবেক্ষক মনে করছেন, ভবিষ্যতে হয়তো এই সহায়তা কমে যেতে পারে।
আলোচনা কতদূর গড়াবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আন্তর্জাতিক মহলের আশঙ্কা, এটি দীর্ঘায়িত হতে পারে এবং এর ফলস্বরূপ ইউক্রেনের জন্য আরও কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা