মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিল নিয়ে রিপাবলিকানদের মধ্যে বিভেদ দেখা দিয়েছে। বিলটি পাস করানোর জন্য ট্রাম্প দলের সমর্থন চাইছেন, তবে টেক্সাসের কংগ্রেসম্যান (মার্কিন সংসদ সদস্য) চিপ রয়-এর বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন তিনি।
রয়-এর আপত্তির কারণে বিলটি আটকে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা ট্রাম্পের রাজনৈতিক এজেন্ডার জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হতে পারে।
মূলত, এই বিবাদের কারণ হলো সরকারি ব্যয়ের পরিমাণ কমানো এবং ফেডারেল ঘাটতি হ্রাস করা। রয় এবং তাঁর সমর্থকরা চান, বিলে ব্যয় সংকোচনের আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
তাদের মতে, স্বাস্থ্যখাতে ভর্তুকি দেওয়া সংক্রান্ত ‘মেডিক্যাইড’ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রকল্পে আরও বেশি কাটছাঁট করা প্রয়োজন। অন্যদিকে, ট্রাম্প দ্রুত বিলটি পাস করতে আগ্রহী, কারণ এটি তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং দলের ঐক্যবদ্ধতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রিপাবলিকান পার্টির অভ্যন্তরে এই বিভেদ নতুন নয়। অতীতেও বিভিন্ন ইস্যুতে ট্রাম্প এবং রয়ের মধ্যে মতবিরোধ দেখা গেছে।
এমনকি, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়েও রয় বিভিন্ন নীতিগত বিষয়ে তাঁর বিরোধিতা করেছেন। যেমন, একবার ঋণসীমা বাড়ানোর বিষয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি অবস্থান নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে, ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিসকে সমর্থন করায় ট্রাম্প রয়ের প্রতি অসন্তুষ্ট হন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে, রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেকার এই অন্তর্দ্বন্দ্ব বেশ জটিল আকার ধারণ করেছে। বিলটি পাস করার জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন আদায়ে দলের স্পিকার (সংসদ নেতা) মাইক জনসনকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।
কারণ, রয়-এর মতো কয়েকজন প্রভাবশালী সদস্য এখনো পর্যন্ত তাঁদের আপত্তির কথা জানাচ্ছেন। তাদের আশঙ্কা, বিলটি বর্তমান রূপে পাস হলে তা সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
কংগ্রেসের (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা) নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বিল পাস হওয়ার আগে বিভিন্ন কমিটি এবং ভোটাভুটির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এই প্রক্রিয়াতেই এখন ট্রাম্প এবং রয়ের মধ্যেকার বিরোধ চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে।
হাউজ রুলস কমিটিসহ (প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ম বিষয়ক কমিটি) বিভিন্ন পর্যায়ে বিলটি নিয়ে আলোচনা চলছে। রয় এবং তাঁর সমর্থকরা যদি তাঁদের অবস্থানে অনড় থাকেন, তবে বিলটি পাস করানো কঠিন হয়ে পড়বে, যা ট্রাম্পের রাজনৈতিক পরিকল্পনাকে নতুন করে সাজাতে বাধ্য করবে।
বর্তমানে, উভয় পক্ষই আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানে আসার চেষ্টা করছে। রয়-এর দলনেতাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে, যাতে বিলের কিছু পরিবর্তন আনা যায়।
তবে, শেষ পর্যন্ত কী ঘটবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিলটি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা রিপাবলিকান পার্টির মধ্যে বিভেদ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।