যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যে, এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায়, জাল কাগজপত্র তৈরি করে স্কুল ছাত্র সেজে ভর্তি হওয়ার অভিযোগে ২৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তের নাম অ্যান্থনি ইমানুয়েল ল্যাব্রাডর সিয়েরা।
পেরিসবার্গ শহরের পুলিশ বিভাগ গত ১৯শে মে তাকে গ্রেপ্তার করে।
অভিযোগ উঠেছে, ল্যাব্রাডর নিজেকে ১৬ বছর বয়সী হিসেবে পরিচয় দিয়ে পেরিসবার্গ হাই স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন। স্কুলের নথিপত্র অনুযায়ী, তিনি জন্মসনদসহ বিভিন্ন কাগজপত্র জমা দিয়েছিলেন, যেখানে তার বয়স কম দেখানো হয়েছিল। এমনকি, তিনি ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং সামাজিক নিরাপত্তা নম্বরও তৈরি করেন।
জানা গেছে, তিনি ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন এবং অস্থায়ী সুরক্ষাও পেয়েছিলেন।
ল্যাব্রাডর ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে পেরিসবার্গ হাই স্কুলে ভর্তি হন। এর আগে, তিনি নিজেকে ভেনেজুয়েলার অভিবাসী এবং গৃহহীন হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। তিনি জানান, তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরপর স্থানীয় একটি পরিবার তাকে আশ্রয় দেয় এবং তারা আদালতের মাধ্যমে তার অভিভাবকত্বও গ্রহণ করে।
স্কুলে তিনি স্বাভাবিক ছাত্রের মতোই মিশতেন এবং খেলাধুলায়ও অংশ নিতেন। কিন্তু গত ১৪ই মে, এক নারীর মাধ্যমে তার আসল পরিচয় ফাঁস হয়ে যায়। ওই নারী দাবি করেন, ল্যাব্রাডর আসলে তার সন্তানের বাবা এবং তার বয়স ২৪ বছর।
তিনি ল্যাব্রাডরের একটি ছবিও প্রকাশ করেন, যেখানে তাকে একটি শিশুর সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও, তিনি ল্যাব্রাডরের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ছবিও দেখান, যেখানে তার জন্ম তারিখ উল্লেখ করা ছিল।
এরপর ওই পরিবারের সদস্যরা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে ল্যাব্রাডরের আসল পরিচয় সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়া যায়, যা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পুলিশের তদন্তে জানা যায়, ল্যাব্রাডর ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন এবং আগামী ২৯শে মে পেরিসবার্গ আদালতে তার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
পেরিসবার্গ স্কুলের সুপারিনটেনডেন্ট টম হসলার এই ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, স্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারীরা ওই ব্যক্তির প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছিলেন, যিনি নিজেকে একজন অসহায় কিশোর হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন।
তিনি আরও জানান, যারা ভালো উদ্দেশ্যে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন, তাদের প্রতি তারা গর্বিত।
তথ্যসূত্র: পিপল