পল রুবেন্স: ‘পি-উই এজ হিমসেলফ’-এ এক অভিনেতার জীবনকথা
হলিউডের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, পল রুবেন্স, যিনি তাঁর কাল্পনিক চরিত্র ‘পি-উই হারম্যান’-এর জন্য সারা বিশ্বে পরিচিত, তাঁর জীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি তথ্যচিত্র।
‘পি-উই এজ হিমসেলফ’ নামের এই তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন পরিচালক ম্যাট উলফ।
সম্প্রতি এইচবিও ম্যাক্সে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে উঠে এসেছে রুবেন্সের শিল্পী জীবন এবং তাঁর ব্যক্তিজীবনের নানা দিক।
এই ছবি তৈরির কাজটি সহজ ছিল না।
পরিচালক ম্যাট উলফ-এর সঙ্গে রুবেন্সের সৃষ্টিশীল স্বাধীনতা নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেয়, যা ছবিটিকে প্রায় বন্ধ করে দেওয়ার উপক্রম হয়েছিল।
এমনকি রুবেন্স যখন তাঁর জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন, ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন, তখনও তিনি বিষয়টি গোপন রেখেছিলেন।
২০২৩ সালের ৩১শে জুলাই, পল রুবেন্সের মৃত্যুর খবর আসে।
খবরটি পাওয়ার পর পরিচালক ম্যাট উলফ-এর মনে হয়, এত দিনের সব দ্বিধা দূর করে এই ছবিটিকে সম্পূর্ণ করা উচিত।
গভীর রাতে, তিনি রুবেন্সের সঙ্গে হওয়া ১৫০০ পৃষ্ঠার কথোপকথনগুলোর লিখিত রূপ পড়তে শুরু করেন।
সেখানে তিনি রুবেন্সের জীবনের গভীরতা অনুভব করেন।
রুবেন্স তাঁর শৈশব, খ্যাতির জটিলতা, নিজের লক্ষ্য, তাঁর চরিত্র পি-উই হারম্যানের প্রতি অঙ্গীকার, তাঁর যৌনজীবন এবং বিতর্কিত কিছু ঘটনা— সবকিছু নিয়েই কথা বলেছিলেন।
তথ্যচিত্রে রুবেন্সের শিল্পী জীবনের শুরু থেকে খ্যাতির শিখরে ওঠা এবং পরে তাঁর জীবনে নেমে আসা অন্ধকার— সবই তুলে ধরা হয়েছে।
কিভাবে তিনি তাঁর বিখ্যাত চরিত্র ‘পি-উই হারম্যান’-এর জন্ম দিলেন, কিভাবেই বা তিনি ‘স্যাটারডে নাইট লাইভ’-এর মতো অনুষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ হারান— সে সব ঘটনাও দর্শকদের সামনে আসে।
এছাড়া, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের কিছু দিক, যেমন— তিনি কিভাবে প্রকাশ্যে গে হিসেবে পরিচিত হয়েছিলেন, সে সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে।
নব্বইয়ের দশকে রুবেন্সের জীবনে আসে এক কঠিন সময়।
একটি প্রাপ্তবয়স্ক সিনেমা হলে ‘অশ্লীল আচরণের’ অভিযোগে তাঁর গ্রেপ্তার হওয়া নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়।
২০০১ সালে তাঁর বিরুদ্ধে শিশু পর্নোগ্রাফি রাখার অভিযোগ আনা হলেও, পরে তা হালকা করে দেওয়া হয়।
এই বিষয়গুলোও তথ্যচিত্রে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
পরিচালক ম্যাট উলফের মতে, রুবেন্স চেয়েছিলেন, তাঁর জীবনের এই বিতর্কিত অধ্যায়গুলো নিয়ে মানুষ নতুন করে ভাবুক।
এই তথ্যচিত্রটি শুধুমাত্র একজন অভিনেতার জীবনকাহিনি নয়, বরং এটি একজন শিল্পীর আত্ম-অনুসন্ধানের এক দলিল।
ছবিটির নির্মাতা ম্যাট উলফ জানিয়েছেন, তিনি চেয়েছেন এমন একটি চলচ্চিত্র তৈরি করতে যা দর্শকদের আনন্দ, দুঃখ, এবং গভীর অনুভূতির মধ্যে নিয়ে যাবে।
তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস।