যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া রাজ্যে ১৯৮৯ সালে, নয় বছর বয়সী ক্যামেরন কোশার নামের এক বালক, সাত বছর বয়সী জেসিকা ক্যার নামের এক বালিকার উপর গুলি চালিয়েছিল। ঘটনার সূত্রপাত হয় একটি ভিডিও গেম নিয়ে তাদের মধ্যে হওয়া বাদানুবাদ থেকে।
১৯৮৯ সালের ৬ই মার্চ তারিখে, যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত ক্রেসগেভিল নামক এলাকায় তুষারপাতের কারণে স্কুল বন্ধ ছিল। সেই সকালে জেসিকা ক্যার, রিচার্ড এবং ট্রুডি রাত্তি দম্পতির বাড়িতে তাদের ছয় সন্তান এবং অন্যান্য প্রতিবেশীদের সাথে খেলাধুলা করছিল।
তাদের প্রতিবেশী ক্যামেরন কোশারও সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিল। তারা ‘স্পাই হান্টার’ নামের একটি ভিডিও গেম খেলছিল।
জানা যায়, খেলার সময় জেসিকা ক্যামেরনকে জানায় যে, তার কাছে গেমটির নিজস্ব সংস্করণ রয়েছে এবং সে ক্যামেরনের থেকে ভালো খেলতে পারে। এই কথাটি বলার পরেই তাদের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়।
পরে, রিচার্ড রাত্তি যখন দেখেন যে, শিশুরা রান্নাঘরে গেম খেলার সময় অনেক ময়লা করেছে, তখন তিনি তাদের বকা দেন। এর কিছুক্ষণ পর ক্যামেরন বাড়ি ফিরে যায়।
দুপুর ১টার দিকে, ক্যামেরন তার বাবার আলমারি থেকে একটি শিকারের রাইফেল বের করে এবং বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি মাঠে স্নোমোবাইলের উপর থাকা জেসিকাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিটি জেসিকার শরীরে লাগে এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর, ক্যামেরন রাইফেলটি পরিষ্কার করে আবার যথাস্থানে রেখে দেয়। পরে, যখন রাত্তি পরিবার জানতে পারে যে তাদের প্রতিবেশী জেসিকাকে গুলি করেছে, তখন তারা ক্যামেরনকে তাদের বাড়িতে ডেকে পাঠায়।
সেখানে, ক্যামেরন নির্বিকারভাবে অন্যান্য শিশুদের সাথে বসে ভিডিও গেম খেলতে থাকে এবং জেসিকার মৃত্যুতে যারা কান্নাকাটি করছিল, তাদের সে জানায়, “যদি তোমরা এটা নিয়ে না ভাবো, তাহলে খারাপও লাগবে না।”
তদন্তের সময় জানা যায়, ক্যামেরন তার বাবার রাইফেল ব্যবহার করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। পুলিশের জেরায় প্রথমে সে জানায় যে, রাইফেলটি পরীক্ষা করার সময় দুর্ঘটনাক্রমে গুলি চলে যায়।
পরে, ১৯৮৯ সালের ৮ই মার্চ, ক্যামেরনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
এই ঘটনার পর স্থানীয় বিচারক রোনাল্ড ই. ভিকান মন্তব্য করেন যে, শিশুদের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকাণ্ডগুলো দ্রুত বাড়ছে এবং এর সুষ্ঠু সমাধানের জন্য সমাজ ও বিচার ব্যবস্থা সেভাবে প্রস্তুত নয়।
১৯৯২ সালে, ক্যামেরন কোশারকে একটি আপস-মীমাংসার মাধ্যমে অনিচ্ছাকৃত নরহত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। জেসিকার মা, ডোনা টিজ এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেন এবং জানান যে, এটি কোনো দুর্ঘটনা ছিল না।
ক্যামেরনকে একটি কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে ২১ বছর বয়স পর্যন্ত আটক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।
তথ্য সূত্র: পিপলস