যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন কংগ্রেসম্যান চার্লি র্যাঙ্গেল, যিনি ৪৬ বছর ধরে কংগ্রেসে দায়িত্ব পালন করেছেন, ৯৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। মে মাসের ২৬ তারিখে মেমোরিয়াল ডে’তে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
র্যাঙ্গেলের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
চার্লি র্যাঙ্গেল ছিলেন একজন বীর যোদ্ধা এবং আইন প্রণেতা। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোরিয়ান যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন এবং কুনুরি যুদ্ধে আহত হন।
এই বীরত্বের জন্য তিনি ‘পার্পল হার্ট’ ও ‘ব্রোঞ্জ স্টার উইথ ভ্যালর’-এর মতো সম্মাননা লাভ করেন। যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে ফিরে এসে তিনি সিদ্ধান্ত নেন আইন বিষয়ে পড়াশোনা করার।
এরপর তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং ১৯৭০ সালে প্রথমবারের মতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে নির্বাচিত হন।
হার্লেমের এই সন্তান ছিলেন “গ্যাং অফ ফোর”-এর অন্যতম সদস্য। এই গোষ্ঠীর অন্য সদস্যরা হলেন ডেভিড ডিঙ্কিন্স, বেসিল প্যাটারসন এবং পার্সি সাটন।
এই প্রভাবশালী নেতারা হার্লেম এবং নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। নিউ ইয়র্ক রাজ্যের প্রাক্তন গভর্নর ডেভিড প্যাটারসন, যিনি প্রয়াত র্যাঙ্গেলের বন্ধু ছিলেন, তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, “আমরা আজ একজন মহান মানুষকে হারালাম।”
কংগ্রেসে র্যাঙ্গেলের দীর্ঘ কর্মজীবনে উল্লেখযোগ্য আইন প্রণয়ন ছিল, যা দেশের মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
তিনি জাতীয় ক্ষমতায়ন অঞ্চল কর্মসূচি, সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা আইন, স্বল্প আয়ের আবাসন কর ক্রেডিট, আমেরিকান রিকভারি অ্যান্ড রেইনভেস্টমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৯, অর্জিত আয়কর ক্রেডিট (ইআইটিসি), কর্মসংস্থান সুযোগ কর ক্রেডিট, ক্যারিবিয়ান বেসিন ইনিশিয়েটিভ (সিবিআই), আফ্রিকা বৃদ্ধি ও সুযোগ আইন এবং ‘র্যাঙ্গেল অ্যামেন্ডমেন্ট’ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়নে সহায়তা করেছেন।
র্যাঙ্গেলের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে রেভারেন্ড আল শার্পটন বলেন, “চার্লি ছিলেন হার্লেমের এক সিংহস্বরূপ। তিনি আমাদের সকলের কাছে অনুপ্রেরণা ছিলেন।”
চার্লি র্যাঙ্গেল শুধু একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন আদর্শ মানুষ। তাঁর স্ত্রী আলমা কার্টার ২০২৪ সালে মারা যান।
র্যাঙ্গেল তাঁর দুই সন্তান স্টিভেন ও অ্যালিসিয়া এবং তিন নাতি-নাতনি রেখে গেছেন।
তথ্য সূত্র: পিপল