যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে সংঘটিত এক মর্মান্তিক ঘটনায় হতবাক সবাই। ডাল্টন শহরে এক ব্যক্তি তার স্ত্রী ও গর্ভবতী প্রেমিকার জীবন কেড়ে নিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ৩৭ বছর বয়সী কেভিন অ্যাকিন্স, ৩৫ বছর বয়সী রেবেকা অ্যাকিন্স এবং ৩৩ বছর বয়সী সিন্ডেল রোডেন।
ডাল্টন পুলিশ বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কেভিন প্রথমে তার স্ত্রী রেবেকাকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর তিনি তার প্রেমিকা সিন্ডেল রোডেনের বাড়িতে যান এবং সেখানে তাকেও হত্যা করেন। পরে তিনি নিজেও আত্মহত্যা করেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ২১ মে সকালে, যখন কেভিন তার স্ত্রী রেবেকাকে ডাল্টনের একটি অ্যাপার্টমেন্টে গুলি করে হত্যা করেন। ডাল্টন শহরটি যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া রাজ্যের উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত, যা টেনিসি সীমান্ত থেকে প্রায় ২০ মাইল দূরে।
এরপর কেভিন তার গাড়ি নিয়ে সিন্ডেল রোডেনের বাড়িতে যান। সিন্ডেল ছিলেন দুই সন্তানের মা এবং সম্প্রতি জানতে পেরেছিলেন যে তিনি কেভিনের সন্তানের মা হতে চলেছেন। সিন্ডেলের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, কেভিন এই নারকীয় ঘটনার পর ‘কাপুরুষের মতো’ আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিন্ডেলকে তার বাবা মৃত অবস্থায় খুঁজে পান। কয়েক দিন ধরে মেয়ের কোনো খোঁজ না পেয়ে তিনি তার অ্যাপার্টমেন্টে যান এবং সেখানে এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখতে পান।
রেবেকার সহকর্মীরা কর্মক্ষেত্রে তার অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাইলে, তার আবাসনে খোঁজ নেওয়া হয়। ২৩ মে সন্ধ্যায়, কর্মকর্তারা রেবেকার অ্যাপার্টমেন্টে যান এবং ভেতরের দৃশ্য দেখে বিস্মিত হন। সেখানে তারা রেবেকার মৃতদেহ খুঁজে পান, যার মাথায় গুলির চিহ্ন ছিল।
তদন্তকারীরা রেবেকার মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে নামেন এবং ঘটনাস্থলের আশেপাশে পাওয়া সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেন। ফুটেজে ঘটনার দুই দিন আগে কেভিনকে অ্যাপার্টমেন্ট ত্যাগ করতে দেখা যায়।
এরপর তারা সন্দেহভাজন কেভিনের গাড়ির সন্ধান করে এবং একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে পৌঁছায়। ২৪ মে, কর্মকর্তারা সিন্ডেলের বাবাকে অ্যাপার্টমেন্টে প্রবেশ করতে এবং দ্রুত বেরিয়ে আসতে দেখেন। জানা যায়, সিন্ডেলের বাবা ৯১১-এ ফোন করে তার মেয়ে ও কেভিনের মৃত্যুর খবর জানান।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত এখনো চলছে এবং ঘটনার মূল কারণ এখনো জানা যায়নি। সিন্ডেলের পরিবার তার শেষকৃত্যের জন্য এবং তার দুই মেয়ের জন্য অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে একটি GoFundMe পেজ খুলেছে। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সিন্ডেল ছিলেন একজন “দয়ালু, প্রাণবন্ত এবং নিবেদিতপ্রাণ মা, যিনি তার মেয়েদের জন্য সবকিছু করতে প্রস্তুত ছিলেন”।
যদি কোনো পাঠক এই ধরনের সহিংসতার শিকার হন, তাহলে অনুগ্রহ করে দ্রুত স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
বাংলাদেশের হেল্পলাইন নম্বর: +৮৮০৯৬১৩৪৪৮০২৯। এছাড়া, ন্যাশনাল ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স হটলাইন-এর হেল্পলাইন নম্বর হল: ১-৮০০-৭৯৯-৭২৩৩। এই পরিষেবাটি বিনামূল্যে এবং ২৪ ঘণ্টা চালু থাকে।
তথ্য সূত্র: ডাল্টন পুলিশ বিভাগ।