ভারতে ‘বিবাহ বোমা’ মামলায় প্রাক্তন এক কলেজ অধ্যক্ষকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ২০১৮ সালের, যেখানে একটি ‘বিবাহ উপহার’-এর মোড়কে পাঠানো বোমা বিস্ফোরণে এক নববিবাহিত যুবক ও তাঁর বৃদ্ধা আত্মীয়া নিহত হন। সম্প্রতি ভারতের ওড়িশা রাজ্যের একটি আদালতে এই রায় ঘোষণা করা হয়।
জানা গেছে, অভিযুক্তের নাম পাঞ্জিলাল মেহের। তিনি ছিলেন একজন প্রাক্তন কলেজ শিক্ষক এবং অধ্যক্ষ। ২০১৮ সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারি, ওড়িশার বালাগিড় জেলার পাটনাগড় শহরে সৌম্য শেখর সাহু নামের ২৬ বছর বয়সী এক যুবক তাঁর বিয়ের পাঁচ দিনের মাথায় একটি পার্সেল পান। সেটি খোলার সঙ্গে সঙ্গেই বোমাটি বিস্ফোরিত হয়।
বিস্ফোরণে সৌম্যর সঙ্গে তাঁর ৮৫ বছর বয়সী মাসিমা জেনামণিও নিহত হন। গুরুতর আহত হন সৌম্যর স্ত্রী রীমা।
তদন্তে জানা যায়, বোমাটি ছিল আসলে একটি ‘বিবাহ উপহার’। পুলিশ জানিয়েছে, পেশাগত ঈর্ষা থেকেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। সৌম্যর মা একসময় ওই কলেজে অধ্যক্ষের পদ থেকে পাঞ্জিলাল মেহেরকে সরিয়ে দেন। এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই মেহের এই বোমা হামলার পরিকল্পনা করেন।
আদালতে পেশ করা তথ্যে জানা যায়, মেহের প্রথমে ঘটনার কথা অস্বীকার করেন। পরে অবশ্য তিনি বোমা তৈরি ও তা পাঠানোর কথা স্বীকার করেন। তিনি দিওয়ালি উৎসবে ব্যবহারের জন্য রাখা বিস্ফোরক থেকে গানপাউডার সংগ্রহ করে বোমা তৈরি করেন এবং একটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে সেটি পাঠান।
পার্সেলটির উপরে প্রেরকের নাম-ঠিকানা হিসেবে ‘এস কে শর্মা, রায়পুর’ লেখা ছিল। রায় ঘোষণার সময় বিচারক মেহেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০,০০০ ভারতীয় রুপি জরিমানা করার নির্দেশ দেন।
এই মামলার তদন্তকারী অফিসার অরুণাভ বথরা জানান, ঘটনার তদন্তের শুরুতে তারা কোনো সূত্র খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে একটি বেনামি চিঠি থেকে তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু সূত্র পান। চিঠিতে লেখা ছিল, বোমাটি ‘এস কে সিনহা’ নামে পাঠানো হয়েছে এবং এর পেছনে আর্থিক বিষয় ও প্রতিশোধের ইঙ্গিত রয়েছে।
সৌম্যর বাবা রবীন্দ্র সাহু আদালতের রায়ের পর জানান, তাঁরা আসামীর মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলেন। কিন্তু আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ায় তাঁরা কিছুটা হতাশ।
তথ্যসূত্র: পিপলস