শিরোনাম: ইরান-ইসরাইল সংঘাত: তেলের বাজারে অস্থিরতা, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী প্রভাব?
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরাইলের সামরিক অভিযান নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে, যার ফলস্বরূপ বিশ্ববাজারে তেলের দাম দ্রুত বাড়ছে। শুক্রবারের এই ঘটনায় তেলের দাম কয়েক বছরের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ বৃদ্ধি দেখিয়েছে, যা জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়াচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে গভীর আলোচনা শুরু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৪.৩ শতাংশ বেড়ে ব্যারেল প্রতি ৭২.৪ ডলারে পৌঁছেছে। এছাড়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার নির্দেশক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই)-এর দাম ৫ শতাংশ বেড়ে ৭১.৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর, অর্থাৎ মার্চ ২০২২ এর পর এটি তেলের দামে একদিনের সর্বোচ্চ বৃদ্ধি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইসরাইলের এই পদক্ষেপের ফলে কেবল তেলের সরবরাহ কমবে তাই নয়, বরং এই অঞ্চলের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়বে। এর ফলে, বিনিয়োগকারীরা এখন নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ঝুঁকছে, যার কারণে শেয়ার বাজারেও দরপতন দেখা যাচ্ছে। শুক্রবার মার্কিন শেয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে, ডাউ জোন্স ফিউচার ১.৩ শতাংশ কমেছে, এসএন্ডপি ৫০০ এবং নাসডাক কম্পোজিট ফিউচারও যথাক্রমে ১.৪ শতাংশ ও ১.৬ শতাংশ কমেছে। একই সময়ে, সোনার দাম ১ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্স ৩,৪১৩.৬ ডলারে পৌঁছেছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই সামরিক অভিযান বেশ কয়েক দিন ধরে চলতে পারে। অন্যদিকে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইসরাইলকে কঠোর পরিণতির হুমকি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন জানিয়েছেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তবে, ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের ওপর আঘাত না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইরানের সম্ভাব্য প্রতিশোধের কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। ইরানের তেল সরবরাহ যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি প্রায় ৭.৫০ ডলার পর্যন্ত বাড়তে পারে। এমনকি হরমুজ প্রণালী দিয়ে তেল সরবরাহ ব্যাহত হলে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারে পৌঁছাতে পারে।
মধ্যপ্রাচ্যের এই অস্থিরতা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ। কারণ, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়লে দেশের বাজারেও তার প্রভাব পড়বে। এতে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যেতে পারে, যা পরিবহন খরচ বৃদ্ধি করবে এবং বাজারে মূল্যস্ফীতি বাড়াতে পারে। এছাড়াও, আমদানি নির্ভর অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়ে যেতে পারে, যা সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
বর্তমানে, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে এবং জনগণের ওপর এইPrice hike-এর প্রভাব কমাতে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বিকল্প উৎস অনুসন্ধানের ওপর জোর দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন