টেক্সাসের সান আন্তোনিও শহরে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ জনে। গত ১২ই জুন থেকে শুরু হওয়া প্রবল বর্ষণের কারণে এই বন্যা দেখা দেয়, যা শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করেছে।
কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানা গেছে, এখনো বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন এবং তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
**বন্যার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি**
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ শহর সান আন্তোনিও-তে বৃহস্পতিবার, ১২ই জুন প্রায় ৭ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়। এই বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় শহরের বিভিন্ন স্থানে জলমগ্নতা দেখা দেয়।
এর ফলে বহু মানুষ আটকা পড়ে এবং তাদের উদ্ধারের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। উদ্ধারকর্মীরা ৭০ জনের বেশি মানুষকে বন্যার কবল থেকে উদ্ধার করেছেন, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন তাদের গাড়িতে আটকা পড়া।
বন্যার কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে সালাডো ক্রিক এবং লিওন ক্রিক। উদ্ধারকর্মীরা তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছেন এবং নিখোঁজদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।
**নিহতদের পরিচয় ও স্বজনদের আহাজারি**
শুক্রবার, ১৩ই জুন, কর্তৃপক্ষ মৃতের সংখ্যা নিশ্চিত করে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ২৮ বছর বয়সী ভিক্টর ম্যানুয়েল ম্যাসিয়াস কাস্ত্রো, ৫১ বছর বয়সী ম্যাথিউ অ্যাঞ্জেল তুফোনো, এবং ৫৫ বছর বয়সী মার্থা দে লা তোরে রাঞ্জেল।
এছাড়াও, ৬১ বছর বয়সী রুডি গারজা নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রুডির পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, শুক্রবার তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্বজন হারানোদের কান্না যেন থামছেই না। রুডির মেয়ে ব্রিটানি গুরero জানান, বন্যার সময় তার বাবার সঙ্গে মায়ের ফোনে কথা বলছিল।
ফোনের ওপাশ থেকে তিনি বাবাকে ‘মা গো, আমার গাড়িতে পানি ঢুকছে’ বলতে শুনেছিলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
অন্যদিকে, স্টিভি রিচার্ডস নামের ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। তার স্ত্রী অ্যাঞ্জেল রিচার্ডস জানিয়েছেন, বন্যার সময় তার স্বামীর গাড়িটি ভেসে যায়।
তিনি জানান, স্বামীর সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি গাড়ির শব্দ শুনতে পান এবং এরপরই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সান আন্তোনিও শহরের এই ভয়াবহ বন্যা বাংলাদেশের মানুষের কাছেও একটি পরিচিত দুর্যোগের চিত্র তুলে ধরে। বর্ষাকালে আমাদের দেশেও প্রায়ই বন্যা দেখা যায়, যা জীবনহানি ও ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়।
এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় আমাদের আরও সচেতন ও প্রস্তুত থাকতে হবে।
তথ্য সূত্র: পিপল