ব্রাজিলের একটি লেকে ছুটি কাটাতে গিয়ে নয় বছর বয়সী ইয়াসমিন ভিয়েইরা নামের এক শিশু পিরানহার আক্রমণে গুরুতর আহত হয়েছে। গত রবিবার (৮ই জুন) ক্যালডাস নোভাসের লাগো সুলে পরিবারের সাথে বেড়াতে গেলে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।

জানা গেছে, পানিতে পা ডুবিয়ে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মাংসখেকো পিরানহাগুলো তার পায়ের আঙুল কামড়ে ছিঁড়ে নেয়।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াসমিনের মা জানায়, “মেয়েটি জায়গাটা দেখতে খুব চেয়েছিল, তাই আমরা তাকে পা ভেজানোর জন্য লেকের ধারে নিয়ে যাই। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সে চিৎকার করে ওঠে, ‘মা, পিরানহা আমার পা কামড়ে ধরেছে!’

এরপর সে জল থেকে উঠে আসে। যখন বসে, তখন দেখি তার পায়ের দুটি আঙুল নেই। দৃশ্যটা খুবই ভয়ঙ্কর ছিল।”

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় লেকের ওই জনবহুল স্থানে অনেক শিশু খেলাধুলা করছিল এবং সেখানে প্রাণঘাতী মাছ সম্পর্কে কোনো সতর্কতামূলক চিহ্ন ছিল না।

আহত হওয়ার পর ইয়াসমিনের শরীর থেকে অনেক রক্ত ঝরছিল উল্লেখ করে তার মা জানান, দ্রুতই স্থানীয় জরুরি বিভাগের সদস্যরা এসে শিশুটিকে মাতৃত্ব হাসপাতালে নিয়ে যায়।

সেখানে তার ক্ষত স্থানে অস্ত্রোপচার করা হয় এবং সেদিনই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এই ঘটনায় ইয়াসমিনের মা গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, “মেয়েটির এই কষ্ট আমাকে খুবই কষ্ট দিচ্ছে। সে তার শরীরের একটা অংশ হারানোর কারণ জানতে চাইছে।

একজন মা হিসেবে, এটা দেখা আমার জন্য খুবই বেদনাদায়ক। আমি মানসিকভাবে ভালো নেই। সে শক্তিশালী থাকার চেষ্টা করছে, কিন্তু অনেক কষ্ট পাচ্ছে।”

তিনি আরও জানান, মেয়ের মানসিক এবং শারীরিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার জন্য তিনি তার পায়ের ক্ষত ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে রেখেছেন।

ক্যালডাস নোভাসের পৌরসভা এক বিবৃতিতে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছে, “শিশুটিকে জরুরি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞসহ চিকিৎসকদের একটি দল তার আঘাত কমাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “পর্যটকদের এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য সতর্কীকরণ সাইন ও পরিবেশ বিষয়ক শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে পরিবেশ ও জল সম্পদ বিষয়ক পৌরসচিবালয় বিভিন্ন জনসমাগম স্থানে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

উল্লেখ্য, পিরানহা মাছ মূলত দক্ষিণ আমেরিকার নদী ও লেকে পাওয়া যায়।

এদের ধারালো দাঁত রয়েছে এবং এরা মাংসাশী।

বাংলাদেশে সাধারণত পিরানহা মাছের উপদ্রব দেখা যায় না।

তথ্য সূত্র: পিপল