খাবার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ক্রাফট হেইঞ্জ তাদের খাদ্য সামগ্রী থেকে ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ সব ধরনের কৃত্রিম রং (artificial dyes) সরিয়ে ফেলবে। সম্প্রতি, স্বাস্থ্য বিষয়ক উদ্বেগের কারণে ভোক্তাদের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ) এই ধরনের রং ব্যবহারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এই প্রেক্ষাপটে, ক্রাফট হেইঞ্জের এই সিদ্ধান্ত ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
কোম্পানিটি তাদের জনপ্রিয় বেশ কিছু পণ্যে যেমন – ক্রাফট ম্যাক অ্যান্ড চিজ, হেইঞ্জ কেচাপ, জেল-ও, এবং ক্যাপরি-সান-এর মতো খাবারে কৃত্রিম রং ব্যবহার করে। মূলত খাদ্য সামগ্রীর উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং শিশুদের আকৃষ্ট করতেই এসব রং ব্যবহার করা হতো।
তবে, খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কৃত্রিম রং মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এর ফলে ক্যান্সার এবং স্নায়ু সম্পর্কিত কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন (এফডিএ) বর্তমানে খাদ্যদ্রব্যে ব্যবহৃত কিছু সিনথেটিক রং পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে। এর আগে, গত জানুয়ারিতে খাদ্য, পানীয় এবং ঔষধ থেকে ‘রেড ডাই নম্বর ৩’ (Red Dye No. 3) নিষিদ্ধ করা হয়।
খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা কর্মীরা বলছেন, ক্রাফট হেইঞ্জের এই পদক্ষেপ সম্ভবত সরকারের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তের প্রতি একটি প্রতিক্রিয়া।
খাদ্যে কৃত্রিম রং ব্যবহারের বিরুদ্ধে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ছে। ক্যালিফোর্নিয়া, ভার্জিনিয়া এবং ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার মতো কয়েকটি রাজ্যে ইতোমধ্যে খাদ্য দ্রব্যে কৃত্রিম রং নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, ক্রাফট হেইঞ্জের এই সিদ্ধান্ত অন্যান্য খাদ্য প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর ওপরও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্রাফট হেইঞ্জের এই পদক্ষেপ তাদের ব্যবসার কৌশলগত পরিবর্তনের একটি অংশ। বর্তমানে, স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে মানুষের আগ্রহ বাড়ছে, যার কারণে অনেক প্রতিষ্ঠিত খাদ্য পণ্যের বিক্রি কমে যাচ্ছে।
গত প্রান্তিকে, কোম্পানির বিক্রি ৬.৪% কমেছে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, কৃত্রিম রং অপসারণের এই সিদ্ধান্ত সম্ভবত বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার একটি প্রচেষ্টা।
খাদ্য নিরাপত্তা এবং গুণগত মান নিশ্চিত করা প্রতিটি দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশেও, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-এর মতো সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে।
ক্রাফট হেইঞ্জের এই পদক্ষেপ, খাদ্য নিরাপত্তা এবং ভোক্তাদের সচেতনতার গুরুত্বের বিষয়টি আরও একবার সামনে নিয়ে আসে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন