আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কানাডার ক্যানানাস্কিস-এ অনুষ্ঠিত জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন। এবারের সম্মেলনে প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা এবং বাণিজ্য বিষয়ক নীতি।
তবে সম্মেলনের মাঝপথেই যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আকস্মিক প্রস্থান অনেককে বিস্মিত করেছে। খবর অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে তিনি জরুরি ভিত্তিতে ওয়াশিংটনে ফিরে যান।
সম্মেলনে যোগ দিতে আসা দেশগুলোর মধ্যে ছিল কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও জাপান। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ন্যাটো প্রধান মার্ক রুটও এই সম্মেলনে যোগ দেন।
মূলত, আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে স্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও, ইরান-ইসরায়েল সংকটের কারণে তা কিছুটা হলেও ব্যাহত হয়েছে।
সম্মেলনে ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং তেহরানকে দ্রুত আলোচনার টেবিলে আসার আহ্বান জানান। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
তবে, সম্মেলনে যোগ দেওয়া অন্যান্য নেতারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বাণিজ্য বিষয়ক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যান।
জানা গেছে, ট্রাম্পের প্রস্থান সম্মেলনের আলোচনার গতিকে কিছুটা হলেও প্রভাবিত করেছে। তিনি বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের বিষয়ে নিজের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও, বাণিজ্য ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে একটি নতুন কাঠামো তৈরি করার ঘোষণাও দেন তিনি। ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে জি-৭ নেতারা রাশিয়ার উপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পক্ষে মত দেন, যেখানে ট্রাম্প এই বিষয়ে কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেন।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই দ্রুত প্রস্থান আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক নীতিগুলোতে এর প্রভাব পড়তে পারে।
বাংলাদেশের জন্য এই ধরনের আন্তর্জাতিক ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব অর্থনীতির গতি প্রকৃতি, বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির সরাসরি প্রভাব আমাদের দেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য এবং বৈদেশিক সম্পর্কের ওপর পড়ে।
উদাহরণস্বরূপ, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়লে, তা আমাদের আমদানি খরচ বাড়িয়ে দেয়, যা পরবর্তীতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনা এবং সিদ্ধান্তগুলো আমাদের দেশের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলোর খবর অনুযায়ী, জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের পরবর্তী আলোচনাগুলোতে বিশ্বনেতারা কিভাবে এই সংকটগুলো মোকাবিলা করেন, সেদিকে এখন সবার দৃষ্টি।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস