আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেডিট কার্ডের জগতে, বিশেষ করে উচ্চ-আয়ের গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে, প্রায়ই বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়। সম্প্রতি, জনপ্রিয় ক্রেডিট কার্ড প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান জেপি মরগান চেজ তাদের ‘স্যাফায়ার রিজার্ভ’ কার্ডের বার্ষিক ফি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই পদক্ষেপটি মূলত একটি বৃহত্তর কৌশল, যা উন্নত সুযোগ-সুবিধা এবং অভিজ্ঞতা-সন্ধানী গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, খুব শীঘ্রই এই কার্ডের বার্ষিক ফি বর্তমানের ৫৫০ ডলার থেকে বেড়ে ৭৯৫ ডলারে দাঁড়াচ্ছে। অর্থাৎ, প্রায় ৪৫ শতাংশ ফি বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
২০১৬ সালে কার্ডটি চালু হওয়ার সময় এর বার্ষিক ফি ছিল মাত্র $৪৫০ ডলার।
এই ফি বৃদ্ধি অনেকের কাছেই বেশ কঠিন মনে হতে পারে, তবে জেপি মরগান চেজ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে যে কার্ড ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন সুবিধা বাবদ বছরে প্রায় ২,৭০০ ডলার পর্যন্ত ফেরত পাওয়ার সুযোগ পাবেন।
এর মধ্যে ভ্রমণ ও ডাইনিংয়ের জন্য বিশেষ সুবিধা, সেই সঙ্গে তাদের নিজস্ব হোটেল এবং ডাইনিং প্রোগ্রামগুলোতেও পয়েন্ট অর্জনের সুযোগ রয়েছে।
এই কার্ডের নতুন সুবিধার মধ্যে রয়েছে, তাদের “দ্য এডিট” প্রোগ্রামের অধীনে বিলাসবহুল হোটেলগুলোর জন্য $৫০০ ডলার পর্যন্ত ক্রেডিট এবং “স্যাফায়ার রিজার্ভ এক্সক্লুসিভ টেবিল” প্রোগ্রামের মাধ্যমে ডাইনিং রিজার্ভেশনের জন্য ৩০০ ডলার পর্যন্ত ক্রেডিট পাওয়ার সুযোগ।
এছাড়াও, স্টাবহাব থেকে টিকিট কেনার জন্য ৩০০ ডলার এবং অ্যাপল মিউজিক ও অ্যাপল টিভিতে বছরে ২৫০ ডলার পর্যন্ত ক্রেডিট পাওয়া যাবে।
এমনকি, আগে থেকেই এই কার্ডে প্রতি বছর ১২০ ডলারের লিফট রাইড ক্রেডিট সুবিধা বিদ্যমান, যা প্রতি মাসে ১০ ডলার করে পাওয়া যায়।
জেপি মরগান চেজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই নতুন স্যাফায়ার রিজার্ভ কার্ডটি তৈরি করা হয়েছে তাদের গ্রাহকদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিবেচনা করে।
এর মধ্যে রয়েছে ভ্রমণ, ডাইনিং, বিনোদন এবং উন্নত পরিষেবা।
শুধু তাই নয়, ব্যবসায়ীদের জন্যেও একটি নতুন স্যাফায়ার রিজার্ভ কার্ড আনা হয়েছে, যার বার্ষিক ফি ৭৯৫ ডলার।
এই কার্ডে জিপ রিক্রুটার এবং গুগল ওয়ার্কস্পেসের মতো পরিষেবাগুলোতে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যাবে।
নতুন বার্ষিক ফি এবং অন্যান্য সুবিধাগুলো ২৬ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।
কার্ডের ডিজাইনও পরিবর্তন করা হয়েছে, যা স্যাফায়ার রিজার্ভ ব্র্যান্ডের আধুনিকতার প্রতীক।
জেপি মরগান চেজ সম্প্রতি স্যাফায়ার কার্ডকে একটি লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে, যার মাধ্যমে তারা আমেরিকান এক্সপ্রেসের মতো অন্যান্য প্রিমিয়াম ক্রেডিট কার্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে চাইছে।
এ লক্ষ্যে তারা বিমানবন্দর লাউঞ্জ তৈরি করা এবং প্যারিসের অলিম্পিক গেমস অথবা মিয়ামির আর্ট বেসেলের মতো বিশেষ অনুষ্ঠানে কার্ড সদস্যদের জন্য বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থা করছে।
অন্যদিকে, আমেরিকান এক্সপ্রেসও তাদের প্লাটিনাম কার্ডের জন্য কিছু পরিবর্তনের ঘোষণা করেছে, যেখানে তারা তাদের “বৃহত্তম বিনিয়োগ” করার কথা জানিয়েছে।
তাদের এই কার্ডের বার্ষিক ফি বর্তমানে ৬৯৫ ডলার।
আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেডিট কার্ডের এই ধরনের পরিবর্তনগুলো গ্রাহকদের জন্য সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ দুটোই নিয়ে আসে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন