বিখ্যাত মার্কিন লেখিকা জয়েস ক্যারল ওটস-এর নতুন রহস্য উপন্যাস ‘ফক্স’ -এ উন্মোচন হচ্ছে এক চাঞ্চল্যকর কাহিনীর আভাস। আগামী ১৭ই জুন বাজারে আসতে চলা এই বইটিতে দেখা যাবে, কীভাবে এক আকর্ষণীয় শিক্ষকের অন্তর্ধানের জটাজালে জড়িয়ে পরে একটি অভিজাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জীবন।
৮৭ বছর বয়সী ওটস-এর লেখক জীবনের নতুন এই পরীক্ষা, ক্লাসিক ধাঁচের একটি রহস্য উপন্যাস। বইটির প্রধান চরিত্র, ফ্রান্সিস ফক্স, যিনি একসময় ‘ল্যাঙ্গরনে একাডেমি’-তে শিক্ষকতা করতেন।
সুদর্শন এই শিক্ষক অল্প দিনেই ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন। তবে, তার আগমনের পেছনে লুকিয়ে ছিল অন্য এক রহস্য।
হঠাৎ করেই একদিন ফক্সের গাড়ি পাওয়া যায় একটি পুকুরে, আর কিছুদিনের মধ্যেই জঙ্গলে পাওয়া যায় অজ্ঞাতপরিচয় কিছু দেহাংশ। এরপরই শুরু হয় আসল কাহিনীর উন্মোচন।
রহস্যের জট খুলতে এগিয়ে আসেন ডিটেকটিভ হোরেস জেন্ডার এবং তার সহযোগী। সবার মনে একটাই প্রশ্ন, ফ্রান্সিস ফক্স-কে তারা কতটা ভালো করে চিনতেন?
ওটস-এর মতে, এই উপন্যাসে তিনি বহু দৃষ্টিকোণ থেকে ঘটনার ঘনঘটা তুলে ধরতে চেয়েছেন, যেখানে প্রথম অধ্যায়েই একটি রহস্যের সমাধান দৃশ্যমান।
উপন্যাসটি লেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে ওটস বলেন, “রহস্যের সমাধানটা আমার কাছে আগে থেকেই জানা ছিল, এবং তারপর আমি সেই অনুযায়ী ঘটনাগুলো সাজিয়েছি।” লেখকের নিজের জীবন থেকেই এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপটটি উঠে এসেছে।
ওটস-এর দৈনন্দিন হাঁটাচলার পথে প্রায়ই চোখে পড়ে প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য, যা ‘ফক্স’-এর ঘটনার সাথে মিলে যায়। প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির আদলে তৈরি ‘ল্যাঙ্গরনে একাডেমি’-র শিক্ষক ফ্রান্সিস ফক্স-এর চরিত্রে সমাজের প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তির ছায়া খুঁজে পাওয়া যায়।
ওটস-এর মতে, “আজকের সমাজে এমন অনেক প্রভাবশালী এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তি আছেন, যারা আসলে প্রতারক। তারা মিথ্যা বলেন, কিন্তু তাদের চরিত্রে এমন একটা মোহ থাকে যে মানুষ তাদের বিশ্বাস করতে চায়। ‘ফক্স’ তেমনই এক আকর্ষণীয় প্রতারকের গল্প।”
উপন্যাসটির একটি বিশেষ অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
“বাবা, ঐ দিকে দেখ।”
কথাটি শুনেই দ্রুত ঘুরে তাকালেন মার্টিন ফেনিং, ১৩ বছর বয়সী মেয়ে ইউনিসের কণ্ঠে উদ্বেগের ছোঁয়া।
ওয়েল্যান্ড পুকুরের কাছে, ভাঙা ঘাস আর জলজ উদ্ভিদের মধ্যে কিছু একটা নজরে আসে ইউনিসের। সে যেন পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, গভীর মনোযোগ দিয়ে তাকিয়ে আছে সেদিকে।
“কী হয়েছে, মা?” জানতে চান মার্টিন।
ইউনিস ফিসফিস করে কিছু একটা বলল, যেন ভয়ঙ্কর কিছু দেখেছে। তার ফ্যাকাসে মুখ, বিস্ফারিত চোখের তারা আর ঠোঁটের কাঁপন দেখে মার্টিনের বুক কেঁপে ওঠে।
ইউনিসের অস্থিরতা সবসময়ই এমন। সামান্য কিছুতেই সে বিচলিত হয়ে পরে। অজানা ভয়ের থেকে সে যেন পরিচিত বিপদকেই বেশি গুরুত্ব দেয়।
মেয়ের হাত ধরে মার্টিন তাকে আড়াল করেন। তিনি চান, মেয়েটি যেন কোনো বিপদে না পরে।
পুকুরের জলে হয়তো কোনো বিষাক্ত সাপ লুকিয়ে আছে।
ইউনিস জানতে চায়, “ওটা কী ছিল বাবা?”
মার্টিন উত্তর দেন, “ওটা কিছু না, আবর্জনা।”
ইউনিস কিছুক্ষণ সন্দেহ নিয়ে তাকিয়ে থাকে, কিন্তু সেখানে আর কিছুই দেখার মতো ছিল না।
ওটস-এর লেখা ‘ফক্স’ বইটি এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: পিপল