ইন্দোনেশিয়ার একটি আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতে সৃষ্ট বিশাল ছাইয়ের স্তূপের কারণে বালিতে বহু ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে, যার ফলে হাজারেরও বেশি পর্যটকের ভ্রমণ পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ৩৫ মিনিটে মাউন্ট লেওটোবি লাকি লাকি (Mount Lewotobi Laki Laki) নামক আগ্নেয়গিরিটি বিস্ফোরিত হয়।
এর ফলে ১১ কিলোমিটার (৬.৮ মাইল) উচ্চতা পর্যন্ত উত্তপ্ত ছাই নির্গত হয়, যা দক্ষিণ-মধ্য ইন্দোনেশিয়ার ফ্লোরেস দ্বীপের উপর দিয়ে যায়।
এই ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে এবং পর্যটকদের এলাকাটি এড়িয়ে চলতে বলেছে।
বালির দেনপাসার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (Denpasar International Airport) ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ রুটের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরের ফ্লাইটও রয়েছে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ফ্রানসিসকাস জ্যাভিয়ারুস সেডা বিমানবন্দরও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরের ওয়েবসাইটে বুধবার সকালে জেটস্টার ও স্কুটের বালিগামী ফ্লাইট বাতিলের খবর দেখা গেছে।
এছাড়াও, এয়ার এশিয়া ইন্দোনেশিয়ার রাজধানীগামী দুপুরের ফ্লাইট বাতিল করেছে।
পর্যটকদের মধ্যে অনেকেই তাদের ফ্লাইট বাতিলের কারণে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।
সিঙ্গাপুর থেকে বালি ভ্রমণে আসা আথিরাহ রসলি নামের একজন পর্যটক জানান, প্রথমে তিনি কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়লেও দ্রুত পরিস্থিতি সামলে নেন।
পরে তারা নতুন ফ্লাইটের টিকিট বুকিং করেন এবং তাদের থাকার ব্যবস্থা পরিবর্তন করেন।
স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের পরে সেখানে প্রায় দুই ডজনের বেশি ভূমিকম্পন হয়েছে।
অগ্ন্যুৎপাতের কারণে ক্রেটারের আট কিলোমিটার (৫ মাইল) এলাকার মধ্যে বসবাসকারী বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে লাভা প্রবাহের সৃষ্টি হতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
বালির একটি ট্যুর অপারেটরের মতে, এই ঘটনায় এক হাজারের বেশি পর্যটক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, বিশেষ করে যারা বালি এবং কোমোডো জাতীয় উদ্যানে ভ্রমণ করতে যাচ্ছিলেন।
গত মে মাসেও এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে সতর্কতা স্তর বৃদ্ধি করা হয়েছিল।
এছাড়াও, মার্চ মাসে হওয়া এক অগ্ন্যুৎপাতের কারণেও বিমান সংস্থাগুলোকে বালিগামী ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্ব করতে হয়েছিল।
ইন্দোনেশিয়া প্রায় ২৭০ মিলিয়ন মানুষের আবাসস্থল এবং এখানে ১২০টিরও বেশি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে।
এই দ্বীপপুঞ্জ “রিং অফ ফায়ার” নামে পরিচিত একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত।
তথ্য সূত্র: সিএনএন